চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় শিক্ষাশালা নামে এক কোচিং সেন্টারে ধর্ষণের শিকার এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ওই কোচিং সেন্টারের শিক্ষক হামিদ মোস্তফা জিসানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন দবহদ্দারহাটের খাজা রোড এলাকার একটি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল ওই ছাত্রী। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে নিজের রুমে ঘুমাতে যায় সে। পরদিন সকালে পরীক্ষার হলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঘুম থেকে না জাগায় রুমের দরজা ভেঙে অচেতন অবস্থায় বের করে তাকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রোববার তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় চান্দগাঁও থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন ওই ছাত্রীর বাবা।

মামলায় আসামি করা হয় কক্সবাজারের মহেশখালীর পশ্চিম পাড়ার বাবুল মিয়ার ছেলে হামিদ মোস্তফা জিসানকে (২১)। তিনি শিক্ষাশালা কোচিং সেন্টারের শিক্ষক। তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা মহেশখালীর কুতুবজোম শাখার সভাপতি।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই শিক্ষার্থী কয়েক মাস ধরে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার ১১ নম্বর রোডের শিক্ষাশালা কোচিং সেন্টারে প্রাইভেট পড়ে আসছে। এ সুযোগে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক ও মামলার আসামি জিসান তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর কোচিং সেন্টারের ভেতরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় আপত্তিকর অবস্থায় ছবিও ধারণ করা হয়। 

পরবর্তী সময়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে তার সঙ্গে কয়েক দফায় শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা হয়। একপর্যায়ে ওই শিক্ষার্থী অসুস্থবোধ করলে তাকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা অন্তঃসত্ত্বা বলে জানান।

অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর সম্পর্ক অস্বীকার করে শিক্ষক হামিদ মোস্তফা জিসান। এরপর ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা চেষ্টা করে ওই শিক্ষার্থী।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ঘুমের ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ধর্ষিতাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তাই জবানবন্দি নেওয়া যায়নি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (উত্তর) পঙ্কজ দত্ত বলেন, মামলায় অভিযুক্তকে আমরা গ্রেপ্তার করে আদালত প্রেরণ করি। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি, এখন পর্যন্ত আসামির দিক থেকে কোনো স্বীকারোক্তি আমরা আদায় করতে পারিনি।

এমআর/কেএ