জলবায়ু উদ্বাস্তুদের অভিবাসী সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্তির আহ্বান
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতের কারণে মানুষের স্থানান্তর এখন এত প্রকট বাস্তব যে, বাংলাদেশ অবিলম্বে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ‘জলবায়ু অভিবাসী’ ও ‘শরণার্থী’র সংজ্ঞা পরিবর্তন করে জাতিসংঘের অভিবাসী ও শরণার্থীদের সংজ্ঞার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করার আহ্বান জানায়।
শনিবার তুরস্কের আনতালিয়ায় ‘আনতালিয়া ডিপ্লোম্যাটিক ফোরাম-২০২৪’ এর ‘বিল্ডিং এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিওনাল আর্কিটেকচার : দ্য চ্যালেঞ্জ অব আনম্যাচিং ইন্টারেস্টস’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
বিজ্ঞাপন
হাছান মাহমুদ বলেন, অনেক ছোট ও দ্বীপ রাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশও জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি গত ৩ দশক ধরে বিশেষত, গ্রিনহাউস গ্যাসের ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধির কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের সমগ্র উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এইসব ঘটনা প্রতিনিয়ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক জায়গায় জলবায়ু অভিবাসনের বৃদ্ধি ঘটাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ লরেন্স অ্যান্ডারসনের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী, শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, ভিয়েতনামের পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী আলোচনায় অংশ নেন।
বিজ্ঞাপন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বহু বছর ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতের বিষয়ে আলোকপাত করে আসছেন। এখন অনেক বিশ্বনেতাসহ সকলের কাছেই এটি স্পষ্ট যে, কোনো দেশের স্থানীয় সমস্যাও বিশ্বব্যাপী প্রভাব ফেলে। তবুও ধনী দেশগুলো, যারা বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য প্রধানত দায়ী, তারা এ সমস্যা মোকাবিলা করতে এবং আমাদের পরিবেশ রক্ষার জন্য খুব কমই করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এই রূঢ় বাস্তবতার অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত হিসাবে ক্ষতিগ্রস্তদের ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষার জন্য সমস্ত পরিবেশকর্মী ও বিশ্বনেতাদের কাছে জলবায়ু অভিবাসী ও শরণার্থীর সংজ্ঞা পরিবর্তনের গুরুত্ব মেনে নিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা প্রণয়নের আহবান জানাচ্ছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, মহাবিশ্বের দুই ট্রিলিয়ন গ্যালাক্সির মধ্যে আমাদের জানামতে একমাত্র পৃথিবী গ্রহেই প্রাণের বিকাশ ঘটেছে। সেই প্রাণের অস্তিত্ব রক্ষায় বিশ্বের পরিবেশ সুরক্ষা এবং এর ওপর বিরূপ প্রভাবগুলো প্রশমনে সযত্ন গুরুত্বদানের কোনো বিকল্প নেই।
এদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইডলাইনে সুইজারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইগন্যাসিও ক্যাসিসের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারা দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন ক্ষেত্রসহ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন।
তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আমানুল হক, মন্ত্রীর একান্ত সচিব আরিফ নাজমুল হাসান, সুইজারল্যান্ডের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক পরিচালক রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল লুশিংগার ও সুইস পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উপদেষ্টা সেড্রিক স্টাকি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এনআই/এসকেডি