করোনা ঠেকাতে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের ফলে দেশে বন্ধ রয়েছে সব গণপরিবহন। ফলে জরুরি ও সাধারণ রোগী পরিবহনের একমাত্র বাহন এখন অ্যাম্বুলেন্স। এতে ব্যাপক দুর্ভোগে পড়ছেন রাজধানীর নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের রোগী ও তাদের স্বজনরা।

বর্তমানে ব্যক্তিগত পরিবহনের বাইরে রাস্তায় চলছে সিএনজি চালিত অটোরিকশা। এই বাহনটি এখন সাধারণ ও গরিব রোগীদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স! সেখানেও ভোগান্তির শেষ নেই। সিএনজিচালকরা ভাড়া চান বেশি আর রোগী বহন করতে চান না। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় রোগীদের। আবার সিএনজি পেলেও গুনতে হয় দ্বিগুণ ভাড়া। 

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কাকরাইল ইবনে সিনা হাসপাতাল ও খিলগাঁওয়ের খিদমাহ হাসপাতাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। অ্যাম্বুলেন্স কম থাকায় বা না পাওয়ায় অনেক রোগী সিএনজিতে আসছেন। 

সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনে কথা হয় নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া থেকে আসা মেহেদী মোল্লার সঙ্গে।  তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভাগ্নি অসুস্থ। তাকে এই হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে না পেরে সিএনজিতে এসেছি। যেখানে সাধারণ সময়ে সিএনজি ভাড়া নিতো ২৫০-৩০০ টাকা। সেখানে এখন আসতে হলো ৬০০ টাকায়।  বিপদে পড়েছি, আসতে হবেই। জিম্মি হওয়া ছাড়া উপায় নেই।

ইউনিভার্সেল হাসপাতালের সামনে সুমন মিয়া নামে একজনকে দেখা যায় কয়েকজন সিএনজিচালকের সঙ্গে কথা বলতে। কাছে গিয়ে জানা যায়, তিনি বৃদ্ধ মাকে নিয়ে ফিরবেন বাড়িতে, নারায়ণগঞ্জের মুক্তারপুরে। মহাখালী থেকে সেখানকার সাধারণ ভাড়া ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। সুমন মিয়া বলেন, সিএনজিচালকদের ৬০০ টাকা পর্যন্ত দিতে চাইলাম, কিন্তু কেউ যেতে রাজি নয়। তারা ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া চায়। এভাবে গরিবদের গলা কেটে কোনো লাভ আছে?’

ভাড়া বেশি চাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন একাধিক সিএনজিচালক। তাদের মধ্যে চালক মামুন বলেন, ‘পেটের দায়ে রাস্তায় সিএনজি বের করেছি। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট ধরলেই ৩০০/৪০০ টাকার মামলা দেয়। আবার যাত্রীদেরও নামিয়ে দেয়। সার্জেন্ট ধরলে হাজার টাকার নিচে কোনো কথা নাই। ভাড়া বেশি না চেয়ে উপায় আছে? আর দিনে কয়টাই বা ট্রিপ পাই। মালিকের জমাও দিতে হয়।’

এমএইচএন/ওএফ/জেএস