রাজধানীর পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় হাজী মুসা ম্যানশনের আগুন নেভানো ও আহত-নিহতদের উদ্ধারের পর নিচ তলায় মজুদ করা গোডাউনের সব কেমিক্যাল সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এরপর ভবনটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বংশাল থানার ওসি শাহিন ফকির ঢাকা পোস্টকে বলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ভাস্কর দেবনাথ, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও বিস্ফোরক পরিদফতরের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সিলগালা করা হয় হাজী মুসা ম্যানশন। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ভবনটি সিলগালা থাকবে।

এরআগে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে বংশাল থানা পুলিশের সহযোগিতায় কেমিক্যালগুলো ধ্বংসের উদ্দেশ্যে মাতুয়াইলে সিটি করপোরেশনের ল্যান্ড ফিল্ডে নেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টা ১৮ মিনিটে আরমানিয়ান স্ট্রিটের হাজী মুসা ম্যানশনে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। ওই ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত আবাসিক ভবন হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে।

আগুন লাগার পর ভবনের ছাদে কিছু লোক আটকা পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজন মারা গেছেন। এছাড়া আহত হয়েছে ২১ জন।

আগুন নেভার পর শুক্রবার বিকেল পৌনে ৩টার দিকে দেখা যায়, হাজী মুসা ম্যানশনের নিচতলার গোডাউনে মজুদ করা কেমিক্যালের বস্তা ও প্লাস্টিকের বড় বড় জারগুলো শ্রমিকদের সাহায্যে তিনটি পিকআপ ভ্যানে করে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সেখানে কমপক্ষে ছোট ছোট ১৫টি দোকান রয়েছে। ওইসব থেকে পাইকারি ও খুচরা কেমিক্যাল বেচাকেনা হতো। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার দিকে কেমিক্যালের গোডাউন থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে বলে জানা গেছে।

আগুন নেভানোর পর সেখানে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ। আগুন পুরোপুরি নির্বাপিত হওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ঢাকা জেলা প্রশাসক ও বিস্ফোরক অধিদফতরের কর্মকর্তারা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত প্রশাসক ভাস্কর দেবনাথ বলেন, ভবনটিতে বিপুল পরিমাণ কেমিক্যাল মজুদ রাখা হয়েছে। তার মধ্যে অনেকগুলো দাহ্য। এই আবাসিক ভবনে কেমিক্যালের গোডাউনের কোনো অনুমোদন নেই। নিরাপত্তার স্বার্থে ও অবৈধ হওয়ায় কেমিক্যালগুলো ধ্বংস করা হবে। তাই এসব কেমিক্যাল সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে মাতুয়াইলের সিটি করপোরেশনের ল্যান্ড ফিল্ডে।

বিস্ফোরক পরিদফতরের উপ-প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভবনটিতে বিপুল পরিমাণ এসিডিক এসিড, সোডিয়াম হাইড্রো অক্সাইড, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড জাতীয় কেমিক্যাল রয়েছে। এরমধ্যে অ্যাসিডিক এসিড ও হাইড্রোজেন পার অক্সাইড জ্বলে ও জ্বলতে সাহায্য করে। 

তিনি বলেন, আগুনের কারণ তদন্ত করলে জানা যাবে। আগুনের কারণ বিভিন্ন হতে পারে, হিট থেকে বা বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেও আগুন লাগতে পারে।

জেইউ/ওএফ/জেএস