পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে বাজারে বেশিরভাগ পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে তেমন বাড়েনি ডালের দাম। বলা চলে, ডালের বাজার স্থিতিশীল আছে। মসুর, মুগ, খেসারি, ছোলা ও মাসকলাই ডালের বেশিরভাগেরই দাম গত মাসের মতোই। শুধু ২টি ডালে ৫ টাকা করে বেড়েছে।

তবে ক্রেতারা জানিয়েছেন ডালের বাজার আগে থেকেই চড়া। এখন শুধু ‘বাজার স্থির আছে স্থির আছে’ বলে ব্যবসায়ীরা সাধু সাজার চেষ্টা করছে। কিনতে তো হয় আমাদের, আমরা বুঝি বিষয়টা।

পাইকারি বাজারে ডালের দাম কিছুটা স্থির থাকলেও কারওয়ান বাজার থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে মুদি দোকানিরা ডাল ভেদে কেজিতে ১৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দাম বেশি রাখছেন।

রোববার (১০ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারি বাজারে মসুর ডাল (উন্নত) ১৩০-১৩৫ টাকা, মসুর ডাল (মোটা) ১১০ টাকা, মুগ ডাল (সরু-উন্নত) ১৬৫ টাকা, খেসারি ডাল ১১০-১২০ টাকা, ছোলা ১১০-১১৫ টাকা এবং মাসকলাই ডাল ১৫০-১৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজার থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে মগবাজারের মুদি দোকানগুলোতে মসুর ডাল (উন্নত) ১৬০ টাকা, মসুর ডাল (মোটা) ১৩০ টাকা, মুগ ডাল (সরু-উন্নত) ১৮০ টাকা, খেসারির ডাল ১৩০ টাকা, ছোলা ১১০-১২০ টাকা এবং মাসকলাই ডাল ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ১০ মার্চ মহানগরীর বাজার তালিকায় পাইকারি বাজারে মসুর ডাল (উন্নত) ১৩০ টাকা, মসুর ডাল (মোটা) ১০৫ টাকা, মুগ ডাল (সরু-উন্নত) ১৭০ টাকা ও ছোলা ১০৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি করার কথা জানানো হয়েছে।

দুই মাস আগে এ বছরের ৯ জানুয়ারি দেখা গেছে, মুসুর ডাল (উন্নত) ১৩০ টাকা, মুসুর ডাল (মোটা) ১০৪ টাকা, মুগ ডাল (সরু-উন্নত) ১৫৯ টাকা এবং ছোলা ১০২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

এক বছর আগে ২০২৩ সালের ৯ মার্চের বাজারদরে দেখা গেছে, সে সময় মসুর ডাল (উন্নত) ১৪০ টাকা, মসুর ডাল (মোটা) ১০০ টাকা, মুগ ডাল (সরু-উন্নত) ১২১ টাকা এবং ছোলা ৯২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

কারওয়ান বাজারের একটি পাইকারি দোকান থেকে বেশ বিরক্তি নিয়ে ডাল কিনছিলেন রেদওয়ান ইসলাম রুবেল। বাজারে ডালের দাম বেশি কি না জানতে চাওয়াতে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ডালের বাজার তো আরো আগে থেকেই চড়া। রমজান মাস হওয়াতে দুই কেজি ছোলা কিনলাম ১১৫ টাকা করে। আগের বছর এটি ১০০ টাকার নিচে ছিল। বছর বছর শুধু দাম বাড়েই। এসব নিয়ে বলার আর কিছু নেই। মুখ বুজে সহ্য করতে হয়। কিনতে তো হয় আমাদের, আমরাই বুঝি বিষয়টা।

আরেক ক্রেতা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মহল্লার দোকানগুলো থেকে এখানে অনেকটা কমে পাইকারি দামে ডাল কেনা যায়। সেটাও ১৫ থেকে ২০ টাকা কমে। তবে বাজারে ডালের দাম আগে থেকেই বেশি।

কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের দোতলায় একটি দোকানের বিক্রেতা নজরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত মাসের তুলনায় খেসারির ডালে ৫ টাকা ও মুগ ডালে ৫ টাকা বেড়েছে। এটা তো আর আমরা বাড়াতে বা কমাতে পারি না। আমাদের যখন যে দামে কিনতে হয়, তার ওপর সীমিত লাভে বিক্রি করি। মাল না থাকলে ৫/১০ টাকার হেরফের হয়।

তবে দোতলার চেয়ে নিচ তলায় ক্রেতাদের বেশি ভিড় দেখা গেছে। তাদের দামের তুলনায় দোতলার ব্যবসায়ীদের দামের ৫/১০ টাকা কম বেশি আছে, এমনটাই দেখা গেছে। তবে তারা কেউ কথা বলতে আগ্রহী হননি।

ডালের দামের বিষয়ে বাংলাদেশ পাইকারি ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শফি মাহমুদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের এখন ডাল কিনতে বেশি টাকা লাগে। আমরা তারপরও যতটুকু সম্ভব কমে বাজারে বিক্রি করি। সব জিনিসের দাম বাড়তি। আজকের বাজারে মসুরি ডাল ১৩০ টাকা, ছোলার দাম ১১০ টাকা, খেসারির ডাল ১১০ টাকা।

এমএইচএন/এসএম