ডা. শামসুজ্জামানের মৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি: স্বাস্থ্য ডিজি
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের (এনআইএলএমআরসি) পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান তুষারের মারা গেছেন। তার মৃত্যুতে স্বাস্থ্য খাতের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে এনআইএলএমআরসিতে শামসুজ্জামানের প্রথম জানাজায় অংশ নিয়ে খুরশীদ আলম এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার প্রতিষ্ঠার পর থেকে পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন অধ্যাপক শামসুজ্জামান। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে নমুনা পরীক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এই প্রতিষ্ঠান। তাকে এতো অল্প সময়ে হারিয়ে ফেলব কল্পনাতেও ছিল না।
সম্প্রতি স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনা সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদফতর মহাপরিচালক বলেন, ‘করোনার এই মহামারিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে সবাইকে সহনশীল আচরণ করার অনুরোধ করছি। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে।’
বিজ্ঞাপন
হেলথ জার্নালিস্টস অব বাংলাদেশের শোক
অধ্যাপক ডা. একেএম শামসুজ্জামানের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন হেলথ জার্নালিস্টস অব বাংলাদেশ।
সংগঠনটির এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পৃথিবীর মায়া ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের প্রথম পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন অধ্যাপক ডা. একেএম শামসুজ্জামান। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে নমুনা পরীক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এই প্রতিষ্ঠান।
অধ্যাপক ডা. একেএম শামসুজ্জামানের মৃত্যুতে আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
মৃত্যুর আগে শেষ চিঠিতে যা লিখেছেন ডা. শামসুজ্জামান
অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান তুষার মারা যাওয়ার আগে শেষ চিঠিতে তিনি তার শেষ ইচ্ছার কথা লিখে গিয়েছেন। চিঠিতে তিনি নিজের ক্রয়কৃত জায়গায় কবর দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে গেছেন এ কে এম শামসুজ্জামান।
পাশাপাশি চিঠিতে তিনি তার কবরের পাশে স্ত্রীকে কবর দেওয়ার নসিহত করেছেন।
ঢাকা পোস্টের হাতে আসা চিঠিটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
"সন্তানগণ ও আত্মীয় স্বজন,
আমার কবর দিও কোরবানির মাঠে (ময়মনসিংহের গফরগাঁও) আমার ক্রয়কৃত জায়গায়। চারদিকে দেওয়াল দিয়ে একটা ছোট ঘর বানিয়ে নাম লিখে দিও।
আমার পাশে আমার স্ত্রীর কবর হবে।
শেষ নসিহত।"
জানা গেছে, গত ৮ এপ্রিল অধ্যাপক ডা. একেএম শামসুজ্জামান খান তুষারের করোনা শনাক্ত হয়। ১০ এপ্রিল শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভারে ভর্তি হন তিনি। ওইদিনই তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। মাঝে অবস্থার অবনতি হলে তাকে তিন দিন লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। পরে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে, সকাল সাড়ে দশটায় শেরে বাংলা নগরের নিজ প্রতিষ্ঠানে তার মরদেহ নেওয়া হয় এবং সেখানে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
টিআই/এমএইচএস