কাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল হস্তান্তরের সময় প্রায় ৬ মাস পিছিয়েছে। এর ফলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আগামী সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে তৃতীয় টার্মিনাল বুঝে নেবে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

রোববার (৭ এপ্রিল) বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তৃতীয় টার্মিনালের হস্তান্তরের কার্যক্রম শনিবার (৬ এপ্রিল) সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। এ বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, নানা যৌক্তিক কারণে তৃতীয় টার্মিনালের ৫ শতাংশ কাজ এখনো শেষ হয়নি। তাই ছয় মাস পিছিয়ে আগামী সেপ্টেম্বরে সিভিল এভিয়েশনের কাছে শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল হস্তান্তর করবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে হস্তান্তর পেছানোর কারণে প্রকল্পটির ব্যয় এক টাকাও বাড়বে না।

বেবিচক জানায়, গতকাল শনিবার এ নিয়ে সিভিল এভিয়েশন দপ্তরে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এবং বুয়েট সুপারভিশন টিম নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সময় ও ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় জাপানি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মিতসুবিশি।

বৈঠকের বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান জানান, প্রকল্পের ৫ শতাংশ কাজের মধ্যে বিভিন্ন ইন্সটলেশন, ক্যালিব্রেশন ও মেশিন প্রি-টেস্টিংয়ের কাজ বাকি রয়েছে। এগুলো সম্পন্নের জন্য সেপ্টেম্বরে প্রকল্প হস্তান্তরের সুযোগ দেওয়া হবে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে।

সেপ্টেম্বরে সিভিল এভিয়েশন দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর পুরাতন টার্মিনালের অনেক কার্যক্রম তৃতীয় টার্মিনালে স্থানান্তর কার্যক্রম শুরু হবে। এ বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) আওতায় কাজ করা বোর্ড, তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনার সার্বিক বিষয় তুলে ধরে রিপোর্ট করবে বেবিচককে। তারপরই জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) সঙ্গে পরিচালনার বিষয়ে আরেকটি চুক্তি হবে।

এর আগে চলতি বছরের ৭ অক্টোবর আংশিকভাবে উদ্বোধন করা হয় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল (থার্ড টার্মিনাল)। ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর কাজ শুরু হওয়া টার্মিনালটি ছিল সরকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প। এটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অত্যাধুনিক এ টার্মিনালের উদ্বোধনের ফলে পৃথিবীতে ঢাকা বিমানবন্দরের গ্রহণযোগ্যতা অনেকাংশে বেড়েছে। এটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা।

বিমানবন্দরটি এত দিন বছরে প্রায় ৮০ লাখ যাত্রীকে সেবা দিলেও নতুন এ টার্মিনাল চালু হলে বছরে অতিরিক্ত এক কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। এখানে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্কিং করা যাবে। ১৬টি ব্যাগেজ বেল্টসহ অত্যাধুনিক সব সুবিধা রয়েছে নতুন এ টার্মিনালে। ২০২৪ সালের অক্টোবরের দিকে পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হবে এটি।

প্রাথমিকভাবে টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের কাজ করবে বিমান। পরে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

এআর/এমএ