কান্নাকাটি ছুটোছুটি কমেছে ঢামেকে
এইতো কিছুদিন আগেও করোনভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে আর রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হত হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সদের। দেখা যেত স্বজনদের ছোটাছুটি করতে। কখনও চিকিৎসকদের কাছে তো কখনও আবার ওষুধের দোকানে ছুটে যেতেন স্বজনরা।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের স্বজনদের চোখে-মুখে দেখা যেত চিন্তার ভাঁজ। সিরিয়ালের জন্য এদিক-সেদিক দৌড় ছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটের নিয়মিত দৃশ্য। কেউ মারা গেলে স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হত আশপাশ। ছিল অ্যাম্বুলেন্সের ঘনঘন আনাগোনা।
বিজ্ঞাপন
কিন্তু দৃশ্য পাল্টে গেছে। এখন আর চিকিৎসক-নার্সদের কর্মব্যস্ততা নেই। নেই রোগীর চাপ সামলানোর ব্যস্ততা। নেই রোগীর সিরিয়াল। শয্যার অভাবে এখান থেকে ফেরত যেতে হয় না করোনা রোগীকে। দিন দিন শয্যা ফাঁকার সংখ্যা বাড়ছে ঢামেকের করোনা ইউনিটে। এখন আর গেটের সামনে অ্যাম্বুলেন্সের জট বাঁধে না।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (২ মে) সরেজমিনে ঘুরে এবং এখানে কর্মরত অনেকের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতিনিয়ত করোনা রোগীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। আগের মতো কোনো চাপ নেই এখানে।
তিনি বলেন, আগে আমাদের রোগীর চিকিৎসা দিতে দিতে হিমশিম খেতে হতো। রোগীর চাপ সামলাতে সামলাতে সবাই নাজেহাল হয়ে যেতাম। আমাদের কাজ সেবা করা। রোগী বেশি থাকলেও আমাদের সেবা দিতে হবে, আবার কম থাকলেও দিতে হবে।
ঢামেকের করোনা ইউনিটের এ চিকিৎসক আরও বলেন, ভালো সংবাদ এই যে, দেশে করোনার সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে। গত কয়েক সপ্তাহে মৃত্যুর সংখ্যা শতাধিকের বেশি ছিল। এখন মৃত্যুর সংখ্যাও যেমন কমেছে, তেমনি শনাক্তের সংখ্যাও কমেছে। এটি একটি ভাল সংবাদ। এখানে শয্যা ফাঁকার সংখ্যা এখন তিন শতাধিক।
ডিউটিরত এক আনসার সদস্যের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, আমরা সকাল থেকে ডিউটি করছি। রোগীর সংখ্যা এত কম, বিশ্বাস হয় না। আগে এখানে এত পরিমাণে রোগীর চাপ থাকত, তা বলে শেষ করা যাবে না। মিনিটে মিনিটে রোগী আসতেন এখানে। এখন আর তা দেখা যায় না। আগে রোগী এলে শয্যা ফাঁকা না থাকায় চলে যেতে হত। এখন আর তা হয় না।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের এখানে ৩০০ শয্যা ফাঁকা আছে। গত দুই-তিন সপ্তাহ ধরে রোগীর সংখ্যা কমায় শয্যা ফাঁকার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
তিনি বলেন, হাই ফ্লো অক্সিজেন এখন আর তেমন ব্যবহার হচ্ছে না। ২০ থেকে ৩০ ভাগ হাই ফ্লো অক্সিজেন ব্যবহার হচ্ছে। এটি ভালো সংবাদ যে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে।
এসএএ/আরএইচ