প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ প্রতিরোধে সদ্য চালু হওয়া দেশের বৃহত্তম করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে বিশেষায়িত সেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি। প্রথম পর্যায়ে হাসপাতালের প্রায় ১৪০ জন চিকিৎসক ও নার্সকে প্রশিক্ষণ শেষে দ্বিতীয় পর্যায়ে মোট চার শতাধিক চিকিৎসক-নার্সকে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার (৪ মে) দ্বিতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণ অধিবেশন উদ্বোধন করেন হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন। ইউএসএআইডি’র মামনি মাতৃ ও নবজাতক স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন প্রকল্প ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স টু কোভিড-১৯ প্যানডেমিক’ এর সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশ।

জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ে প্রশিক্ষণ শুরু হয় ১৪ এপ্রিল, যা ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। হাসপাতালের প্রায় ১৪০ জন চিকিৎসক ও নার্স চারটি ব্যাচে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশন ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের কম্যুনিকেবল ডিজিস সেন্টার যৌথভাবে প্রতি ব্যাচে ২ জন করে প্রশিক্ষকের মাধ্যমে দুই দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ সেশন চালিয়ে নিচ্ছেন। করোনাভাইরাসের বিবরণ, লক্ষণ, শনাক্ত ও কেস ভিত্তিক চিকিৎসার উপায়সহ ব্যক্তিগত সুরক্ষা এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ, চেস্ট রেডিওলজি এবং রোগ নির্ণয়ের জন্য ইমেজিংয়ের ব্যবহার, আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়িতে চিকিৎসা ও করোনা পরবর্তী জটিলতা মোকাবিলা সম্পর্কে সম্মুখ জ্ঞান নিশ্চিত করা এই প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য।

প্রথম পর্যায়ের প্রশিক্ষণের সুফলের পর, প্রকল্পটি আজ থেকে এর পরবর্তী ব্যাচের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু করেছে। আরও ছয় ব্যাচের মাধ্যমে এই হাসপাতালের মোট ৪শ জন চিকিৎসক এবং নার্সকে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে তৈরি করতে প্রকল্পটি বদ্ধ পরিকর।

চলমান মহামারিতে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ঊর্ধ্বগতির ফলে অন্যান্য হাসপাতালে রোগীর চাপ সামলাতে এবং মারাত্মক করোনা আক্রান্ত রোগীর বিশেষ সেবার জন্য যা যা প্রয়োজন সেসব যন্ত্রপাতি ও পথ্যের যথেষ্ট যোগান সম্বলিত এই হাসপাতালটি অতি সম্প্রতি তার সেবা শুরু করেছে।

এদিকে, বাংলাদেশ সরকারকে করোনাভাইরাসের মহামারি মোকাবিলায় ইউএসএআইডি সেভ দ্য চিলড্রেনের মাধ্যমে তার এই ইমার্জেন্সি রেসপন্স টু কোভিড-১৯ প্রকল্প পরিচালিত করছে। এর মাধ্যমে গত বছর থেকে বাংলাদেশি চিকিৎসক এবং চিকিৎসা সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যান্য সম্মুখ যোদ্ধাদের ক্লিনিকাল দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের সক্ষমতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি স্বাস্থ্য কেন্দ্র্রগুলোকে চিকিৎসার জন্য উপযোগী করা, মাঠ পর্যায়ে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি ও জাতীয় পর্যায়ে টিকা কার্যক্রমে বিভিন্নভাবে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইউএসএআইডি’র মাধ্যমে বাংলাদেশকে ২৮ কোটি ডলারেরও বেশি উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করেছে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিভিন্ন অধিদফতরের মাধ্যমে বাংলাদেশের কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ৫ কোটি ডলারের বেশি প্রদান করেছে।

টিআই/জেডএস