কোটা নয়, ছাত্রসমাজ মেধার ভিত্তিতে চাকরি চায়
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা বাতিল এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রাখার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা বলেন, কোটা নয়, ছাত্রসমাজ মেধার ভিত্তিতে চাকরি চায়। কোটা এই সমাজ ব্যবস্থায় বড় একটি বৈষম্য তৈরি করেছে। যার ফলে এক শ্রেণির মানুষ অধিক লাভবান হচ্ছেন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েই যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ঢাকা কলেজের মূল ফটকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। এসময় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের কোটা বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে এবং ব্যানার-ফেস্টুন প্রদর্শন করতে দেখা যায়।
বিজ্ঞাপন
অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, বর্তমান সরকার স্মার্ট এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চায়। সেজন্য মেধাবীদের সুযোগ করে দিতে হবে। কোটা দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ করা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
এই শিক্ষার্থী আরো বলেন, পাকিস্তানের সীমাহীন বৈষম্যের বিরুদ্ধেই লড়তেই এদেশের মুক্তিযোদ্ধা সূর্য সন্তানেরা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আমরা মনে করি স্বাধীনতার পর এখন পর্যন্ত দীর্ঘ ৫৩ বছর ধরে চলমান এই কোটা পদ্ধতি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি। কোটা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের ছোট করা হচ্ছে। আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান রেখে সরকারকে বলতে চাই তাদের যত ইচ্ছা সুযোগ-সুবিধা দেন তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু এর বিপরীতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্য মূলক আচরণ করা যাবে না।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংসদে ঘোষণা দিয়েছিলেন বিসিএসসহ সরকারি সব প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা থাকবে না। আমরা তার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলাম। আমরা বলতে চাই ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত সেই পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। একই সঙ্গে শুধু প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণিতে নয় বরং দ্বিতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতেও অযৌক্তিক সব কোটা বাতিল করতে হবে।
আরিফুল ইসলাম নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, সবার জন্য সমান সুযোগ ও সমতা তৈরি করে দেওয়ার দায়িত্ব ও রাষ্ট্রের। যা সংবিধানেও উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এমন ব্যবস্থা চলতে থাকলে একসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের বড় পর্যায়ে যাওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে। সেজন্যই আমরা এ বিষয়ে সরকারের স্পষ্ট নীতিমালা প্রত্যাশা করছি। কোটা পুনর্বহাল নয় বরং বাতিলের আদেশই বলবৎ রাখতে হবে। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এমনটিই চাইছেন। ২০১৮ সালের পরিপত্র করা না হলে আমাদের এই আন্দোলন চলবে।
অপরদিকে হাইকোর্টের দেওয়া প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে টানা তৃতীয় দিনের মতো শাহবাগ মোড়ও অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে করে সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে শাহবাগ অচল হয়ে পড়েছে।
আরএইচটি/এসএম