বিধিনিষেধ শিথিলে খুলেছে দোকানপাট-শপিংমল। আন্তঃজেলা বন্ধ থাকলেও বিভাগীয় শহর এবং জেলার অভ্যন্তরে চলছে গণ পরিবহন। তবে এসব পরিবহনে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলা হলেও তা ঠিকঠাক মানা হচ্ছে না। মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা মানছেন না যাত্রী ও পরিবহণ শ্রমিকরা।  

শুক্রবার (৭ মে) দুপুরে রাজধানীর শ্যামলী, কল্যাণপুর, কলেজগেট ও শিশুমেলা এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, যাত্রীবাহী পরিবহনের শ্রমিকদের মধ্যে মাস্ক পরার খুব একটা তাগাদা নেই। অধিকাংশ হেলপারের মুখেই মাস্ক নেই। মাস্ক থাকলেও সেটি কারো থুতনিতে আর কারো নাকের নিচে।

অথচ সরকারি তরফে বলা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ঘরের বাইরে মাস্ক ব্যবহারে তারা কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

যাত্রী বা হেলপার কেউই সঠিকভাবে মাস্ক ব্যবহার করছেন না /ছবি- ঢাকা পোস্ট

নির্দেশনা বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছে। তবে সরকারের নির্দেশনায় চাপ নেই গণপরিবহনে।

মিরপুর মেট্রো সার্ভিস, বৈশাখী পরিবহন, প্রজাপতি, ৭ নং বাস, গাবতলী এক্সপ্রেস ৮ নং বাস, সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী ট্রাক, লাব্বাইক, মৌমিতা, ভূঁইয়া পরিবহন, ট্রান্স সিলভা, ঠিকানা, বাহন পরিবহনসহ বিভিন্ন কোম্পানির শতাধিক বাসে প্রায় একই রকম চিত্র দেখা গেছে।

দেখা যায়, অধিকাংশ হেলপারের হাতে নেই সুরক্ষা সামগ্রী ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার। মুখে নেই মাস্ক। অনেক পরিবহনের হেলপার আবার ক্যামেরা ও ছবি তোলা দেখে ‍মুখে মাস্ক পরে নেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অধিকাংশ হেলপার-চালক কথা না বলে বাসের ভেতরে ঢুকে পড়েন।

জানতে চাইলে ঠিকানা পরিবহনের এক হেলপার নিজের নাম সজল উল্লেখ করে জানান, শুক্রবার হওয়ায় যাত্রী নেই। দেখেন বেশিরভাগ সিট ফাঁকা। এরমধ্যে আবার প্রচণ্ড গরম। নিশ্বাস নেওয়া কষ্ট হয়। বাধ্য হয়ে মাস্ক নিচে নামিয়ে রাখতে হচ্ছে।

গাবতলী এক্সপ্রেসের একটি বাসের হেলপার বলেন, যাত্রীই কম, মাস্ক পরে কী আর করব! প্রজাপতি বাসের হেলপারের সঙ্গে কথা বলতে গেলে থুতনি থেকে মাস্ক টেনে উপরে উঠিয়ে নিজের নাম উল্লেখ না করে বলেন, মাস্ক পরলেই কী হবে আর না পরলেই কী হবে? করোনা কি বসে আছে?

ড্রাইভার-হেলপার কেউই মাস্ক সঠিকভাবে পরছেন না /ছবি- ঢাকা পোস্ট

লকডাউনে মার্কেট শপিংমল খুলে দেওয়ার পর গণপরিবহন চালুর দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর দাবি জানায় ঢাকা জেলা বাস মিনিবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন। এক্ষেত্রে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সংগঠনটি।

এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা বাস-মিনিবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি ওসমান আলী বলেন, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা মনিটরিং করছে। আমরা নিজেরাও মনিটরিং করছি।

সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সামদানী খন্দকার বলেন, কোনো পরিবহন যদি সুরক্ষা নীতি উপেক্ষা করে, মাস্ক না পরে তাহলে সরকারের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

জেইউ/ওএফ/জেএস