অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে অবৈধ জুয়া পরিচালনার ভার্চুয়াল কারেন্সি আদান-প্রদান করছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চার ছাত্র। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন এজেন্টের কাছ থেকে কারেন্সি সংগ্রহ করে দেশব্যাপী অনলাইন জুয়াড়িদের সরবরাহ করতেন তারা। কারেন্সি বিক্রি ও ইনক্যাশের জন্য তারা ব্যবহার করতেন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন এলাকার বিকাশ, নগদ ও রকেট এজেন্টের নম্বর।

ভার্চুয়াল কারেন্সি ব্যবহারে ক্যাসিনো প্লাটফর্মের মাধ্যমে অনলাইন জুয়া ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

অভিযুক্তরা হলেন, মো. শাহিনুর রহমান (২৬), দীপ্ত রায় প্রান্ত (২৫), মো. গোলাম মোস্তফা (২৬) ও মো. রাকিবুল হাসান (২৭)।

সোমবার (১০ মে) রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে সিটিটিসির একটি টিম। এ সময় তাদের কাছ থেকে অনলাইন জুয়ায় ব্যবহৃত ল্যাপটপ, আইপ্যাড, একাধিক স্মার্ট ফোন, হার্ডডিস্ক, পাসপোর্ট এবং জাতীয় পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়।

সিটিটিসির ইকোনমিক ক্রাইম অ্যান্ড হিউম্যান ট্রাফিকিং টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম জানান, একটি সংঘবদ্ধ দেশি-বিদেশি প্রতারকচক্র Perfect money, melbet, movcash(1xbet) Ges Linebet এর মতো বিভিন্ন ভার্চুয়াল কারেন্সি এবং পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে অনলাইন জুয়া পরিচালনা করছিল।  গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নিকুঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা প্রত্যেকেই বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।

তিনি বলেন, গ্রেফতার শাহিনুর ক্যাসিনো প্লাটফর্মের বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইন জুয়া পরিচালনাসহ অর্থ লেনদেন করেন এবং পেমেন্ট গেটওয়ে melbet ও Linebet এর সরাসরি এজেন্ট। গ্রেফতার দীপ্ত রায়, মোস্তফা ও রাকিবুল movcash(1xbet) এর মাধ্যমে অনলাইন জুয়া পরিচালনা করতেন।

তিনি আরও বলেন, অভিযুক্তরা অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে অবৈধ জুয়া পরিচালনার ভার্চুয়াল কারেন্সি আদান-প্রদান এবং ডিপোজিট-এনক্যাশ করত। এ অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তারা দেশ বিদেশের বিভিন্ন এজেন্টের কাছ থেকে কারেন্সি সংগ্রহ করে এবং দেশব্যাপী অনলাইন জুয়াড়িদের সরবরাহ করত। গ্রাহকদের কাছে এই কারেন্সি বিক্রি এবং ইনক্যাশের জন্য জয়পুরহাটের আক্কেলপুর, টাঙ্গাইল এবং ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার বিকাশ, নগদ ও রকেট এজেন্ট নম্বর ব্যবহার করত।

সহকারী পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতার চারজনই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। চারজনই প্রথমে ছিলেন অনলাইন জুয়ার ইউজার। তারপর ধীরে ধরে নিজেরাই এজেন্ট হয়ে যান।

করোনায় ক্লাস-পড়াশুনা বন্ধ থাকায় অনলাইন জুয়ায় ঝোঁক

করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ। বাইরে ঘোরাঘুরি কমে গেছে। এই সুযোগে জমে উঠেছে অনলাইন জুয়া। যারাই অনলাইনে জুয়া খেলতে চান তাদের প্রথমে অনলাইন কারেন্সির প্রয়োজন পড়ে। আর এ কারেন্সির ব্যবস্থা করে দিতেন গ্রেফতার চারজন। বিনিময়ে তারা বিকাশ, নগদ ও রকেট এজেন্ট নম্বর ব্যবহার করে টাকা সংগ্রহ করতেন। এ জন্য তারা ঢাকার বাইরের বিভিন্ন এজেন্টের নম্বর ব্যবহার করতেন তারা। 

ভার্চুয়াল কারেন্সি ব্যবহার করে ক্যাসিনো প্লাটফর্মের মাধ্যমে অনলাইন জুয়া ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাদের বিরুদ্ধে খিলক্ষেত থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতার প্রত্যেক আসামির ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জু করেছেন আদালত। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে সিটিটিসি।

জেইউ/এসকেডি