প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঈদের পরও আবারও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ঈদযাত্রায় মানুষ যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি অবহেলিত ও উপেক্ষিত করেছে তাতে সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে।

বুধবার (১২ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় চীনের পাঁচ লাখ টিকা গ্রহণ করার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, সরকার থেকে জনগণকে সুরক্ষিত রাখার জন্য বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জনগণ সেই বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ঈদে বাড়িতে গিয়েছে।

শুধু ভ্যাকসিনের মাধ্যমে এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব নয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, টিকা নিয়ে আপনাকে অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করে ঈদ পালন করতে হবে।

জাহিদ মালেক বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে টিকা নেওয়া একটি অন্যতম পন্থা। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই। ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত মাস্ক পরাও আরেকটি পন্থা।

৮০ শতাংশ জনগণের টিকা নিশ্চিত করতে চায় সরকার

দেশের ৮০ শতাংশ জনগণের টিকা নিশ্চিতে দ্রুত চীন থেকে আরও টিকা পেতে দেশটির সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আরও টিকা পেতে চীন সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ভ্যাকসিন আমরা পাব সেই প্রক্রিয়া নিয়ে এগোচ্ছি।

তিনি বলেন, সিনোফার্মার টিকা চীনসহ বিভিন্ন দেশে ব্যবহার করা হচ্ছে। এরইমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ টিকার অনুমোদন দিয়েছে। আমরা আশা করি এই টিকাটি আরও বেশি করে আমাদের দেশে আনতে পারব।

চীন বাংলাদেশের বন্ধুত্ব সুসংহত হলো

টিকা উপহারে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব সুসংহত হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, দেশটির সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে, অর্থনীতির সম্পর্ক রয়েছে, তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প দেশে বাস্তবায়ন হচ্ছে, তারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরাও চীনের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম প্রথম যখন তাদের দেশে করোনাভাইরাস দেখা দেয়। একইভাবে চীন আমাদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ দেখাল পাঁচ লাখ ভ্যাকসিন উপহার দিয়ে।

তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে পাঁচ লাখ ভ্যাকসিন দিয়েছে সেই ভ্যাকসিন বাংলাদেশে পৌঁছেছে, আজ আমরা সেই ভ্যাকসিন আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছি। তাদেরকে আমরা বিশেষ করে ধন্যবাদ জানাই দুঃসময়ে আমাদের পাশে থাকার জন্য।

অনুষ্ঠানে এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল বাসার খুরশীদ আলম উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে উপহারের এই টিকা সকাল ৭টার দিকে ইপিআইয়ে আনা হয়।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ডা. রওশন জাহান আক্তার আলো বলেন, ইপিআইতে ঢোকানোর পর টিকার সঠিক সংখ্যা ও তাপমাত্রা ঠিক আছে কি না এটি পরীক্ষা করা হয়েছে। সবকিছু ঠিক আছে। আমরা পাঁচ লাখ টিকা বুঝে পেয়েছি।

চীন থেকে টিকা আনতে মঙ্গলবার ১৩ জন এয়ার ক্রু চীনের উদ্দেশে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়েন। বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার হাবিবুর রহমান দলনেতা হিসেবে এই গুডউইল মিশনের দায়িত্ব পালন করেন।

টিআই/জেডএস