নারায়ণগঞ্জের সােনারগাঁ থানাধীন কাউচর এলাকার বাসিন্দা মো.আজিম উদ্দিনের (৭০) বাড়িতে বাসা ভাড়া নেন এক দম্পতি। অল্প দিনেই বাড়ির মালিক ও তার স্ত্রীর সঙ্গে গড়ে তোলেন সখ্য। এক পর্যায়ে বাড়ির মালিক ও তার স্ত্রীকে অজ্ঞান করে স্বর্ণালংকার ও টাকা পয়সা চুরির পরিকল্পনা করেন তারা।

 অভিযুক্তরা হলেন মো. হারুন অর রশীদ (২৪) ও মোসা. সুলতানা খাতুন (২৫)।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (৮ মে) রশীদ ও সুলতানা বাসার মালিক মো.আজিম উদ্দিনকে চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অজ্ঞান করে তার স্ত্রী মোসা.হোসনেয়ারা বেগমকে (৬৪) শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর তারা ঘরে থাকা ২ লাখ টাকা ও তিন ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় পরদিন রোববার (৯ মে) মো.আজিম উদ্দিন সোনারগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ছায়া তদন্ত শুরু করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে মঙ্গলবার (১১ মে) গাজীপুর থেকে রশীদ ও সুলতানাকে গ্রেফতার করে সিআইডির একটি টিম।

 বুধবার (১২ মে) রাজধানীর মালিবাগে অবস্থিত সিআইডির সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংস্থাটির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসাইন।

ইমাম হোসাইন বলেন, ঘটনাটি গণমাধ্যমে আলােচিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে প্রকাশিত হয়। অপরাধ সংঘটনের পর সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে। সিআইডির টিম ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আসামিদের গ্রেফতারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। অবশেষে সিআইডির চৌকস দল এ হত্যা মামলার মূলহােতা মাে. হারুন অর রশীদ এবং সহযােগী মােসা. সুলতানা খাতুনের অবস্থান শনাক্ত করতে সমর্থ হয়। গাজীপুর এলাকা থেকে গতকাল রাতে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেন। হত্যাকাণ্ডের পর খুব কম সময়ের মধ্যে পলাতক আসামিদের গ্রেফতার সিআইডি তথা পুলিশের একটি উল্লেখযােগ্য অর্জন।

তিনি আরও বলেন, আসামিরা পেশাদার চুরি চক্রের সদস্য। তারা এভাবেই বিভিন্ন পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে মালিককে টার্গেট করে অর্থ ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। অধিকাংশ সময় মালিক ও তার পরিবারের লোকজনকে চায়ের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে অজ্ঞান করে ঘটনা ঘটায়। তারা এ বাসাটি চার মাস আগে ভাড়া নেয়। পরে তারা বিভিন্নভাবে মালিক ও মালিকের স্ত্রীকে টার্গেট করতে থাকে। তাদের টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকারের বিষয়ে তথ্য নিতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা পরিকল্পনা করে গত শনিবার এ ঘটনাটি ঘটায়।

তিনি বলেন, বাড়ির মালিককে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে প্রথমে অজ্ঞান করে ফেলে চক্রটির দুই সদস্য। বিষয়টি স্ত্রী বুঝতে পারলে তাকে মুখে গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে রশিদ ও সুলতানা। পরে তারা টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। তবে তাদের প্রাথমিকভাবে হত্যার কোনো পরিকল্পনা না থাকলেও পরিস্থিতির এক পর্যায়ে তারা বাড়ির মালিকের স্ত্রীকে হত্যা করে। এ ঘটনার সঙ্গে আরও দুইজন জড়িত রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এমএসি/এসকেডি