নতুন বিধিনিষেধেও গাছাড়া ভাব
বিধিনিষেধের মধ্যেও থামছে না ঢাকামুখী মানুষের ঢল
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় আরেক দফায় বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। যা চলবে ২৩ মে পর্যন্ত। সরকার ঘোষিত এ দফার বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে গাছাড়া ভাব দেখা গেছে রাজধানীতে। নগরীর সড়ক, দোকানপাট বা অফিসে কোথাও সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের নিয়ম পালন করতে দেখা যায়নি।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকেই কর্মস্থলমুখী মানুষের ভিড় দেখা যায়। ছিল না স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনের বালাই। অনেকেই মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বের হন।
বিজ্ঞাপন
এদিকে রাজধানীতে চলা গণপরিবহনেও উপেক্ষিত হচ্ছে বিধিনিষেধ। অনেক বাসে নিকট আত্মীয় না হলেও পাশাপাশি সিটে বসে যাতায়াত করতে দেখা গেছে যাত্রীদের। এছাড়া বাসে উঠা অনেক যাত্রীর মুখে দেখা যায়নি মাস্ক।
এ বিষয়ে বাসের চালকরা বলছেন, বারবার নিষেধ করার পরও যাত্রীদের অনেকেই মাস্ক না পরে বাসে উঠছেন। ফলে যাত্রীদের কারণে বাসের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি অনেকাংশে মানা সম্ভব হচ্ছে না।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে রাজধানীতে শপিং মল বন্ধ থাকলেও এলাকাভিত্তিক কিছু কিছু দোকানপাট খোলা রয়েছে। সেসব দোকানপাটে কেনাবেচা করার সময় ক্রেতা বিক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। এছাড়া ঈদের ছুটিতে যাওয়া মানুষ দলবেঁধে ফিরছেন রাজধানীতে। সে ক্ষেত্রেও চরমভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে বিধিনিষেধের নিয়ম।
সোমবার (১৭ মে) রাজধানীর রামপুরা, শান্তিনগর, মতিঝিল, গুলশান ও গাবতলী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঈদের ছুটির রেশ না কাটায় রাজধানীতে এখনও মানুষ ও গাড়ির চাপ কম রয়েছে। তবে রাস্তায় বের হওয়া অধিকাংশ মানুষই বিধিনিষেধের নিয়ম মানছেন না। এছাড়া বিধিনিষেধ কার্যকরে প্রশাসনের তৎপরতা মাঠ পর্যায়ে দেখা যায়নি।
গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেটের একটি ইলেকট্রিক পাখার দোকানের মালিক জায়েদ মিয়া বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে কেনাবেচা করছেন। বিধিনিষেধের নিয়ম না মেনে কেনাবেচা করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুখে মাস্ক পরে ক্রেতাদের সঙ্গে ঠিকভাবে কথা বলা যায় না। তাই মুখ থেকে অনেক সময় মাস্ক খোলে রাখি। এছাড়া অনেক ক্রেতা মাস্ক না পরে দোকানে আসেন, মাস্ক পরার কথা বললে তারা ‘মাইন্ড’ করেন। তাই যতটুকু সম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা করছি।
রাজধানীর সায়দাবাদ থেকে গাজীপুরগামী অনাবিল পরিবহনের একটি বাসে অনেক যাত্রীকেই মাস্ক পরিধান করতে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে বাসের চালক মো সেন্টু বলেন, আমরা যাত্রীদের বার বার বলি মাস্ক পরে বাসে উঠতে। না হলে পুলিশ আমাদের জরিমানা করবে। কিন্তু অনেক যাত্রী আমাদের কথা শোনে না। যাত্রীদের কারণেই বাসে স্বাস্থ্যবিধি ঠিক রাখা যায়নি।
তবে শুধু যাত্রীই নয়, অনেক বাসের চালক এবং হেলপারকেও মুখে মাস্ক পরিধান করতে দেখা যায়নি। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি না মেনে যাত্রী উঠানামা করতেও দেখা যায় তাদের।
সদরঘাট থেকে উত্তরাগামী ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের একটি বাসের হেলপার আলম মিয়া মাস্ক না পরেই রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ডাকছেন। মাস্ক না পরার বিষয়ে আলম বলেন, সারাক্ষণ মাস্ক পরে থাকতে ভালা লাগে না। আর মুখে মাস্ক পরে যাত্রীদের ডাকলে কেউই শোনে না। তাই মাঝে মধ্যে দম ফেলা ও যাত্রী উঠানোর জন্য মাস্ক খোলে রাখি।
এদিকে বিধিনিষেধের শুরুতে রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশের চেকপোস্ট থাকলেও তা এখন নেই বলেই চলে। এছাড়া রাস্তায় বের হওয়া মানুষদের কারোই মুভমেন্ট পাস দেখা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, কঠোরতার পাশাপাশি মানুষের সচেতনতার দিকেও নজর দিচ্ছে পুলিশ। মানুষ সচেতন না হলে পুলিশের একার পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব নয়। এছাড়া মুভমেন্ট পাসের বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়নি।
এমএসি/এসকেডি