টেকসই ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য কৌশল তৈরিতে সরকার ও বেসরকারি খাত উভয়েরই এগিয়ে আসা উচিৎ বলে মত দিয়েছেন দেশের প্রযুক্তি সংশ্লিষ্টরা। এ সময়ে তারা ব্যবধান কমিয়ে সক্ষমতা অর্জনে ডিজিটাল ট্রান্সফরম্যাশনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস উপলক্ষে ‘অ্যাকসেলেরেটিং ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ডিউরিং চ্যালেঞ্জিং টাইমস’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রযুক্তিখাতের সংশ্লিষ্টরা এ মত দেন।

অনুষ্ঠানটির আয়োজনে ছিল গ্রামীণফোন ও দ্য ডেইলি স্টার। সোমবার (১৭ মে) অনুষ্ঠিত এ ওয়েবিনারে বক্তারা বৈশ্বিক মহামারিতে প্রতিকূল পরিবেশে মানিয়ে নিতে ডিজিটাল রূপান্তরের গুরুত্ব ও ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবধান দূর করতে ডিজিটাল ট্রান্সফরম্যাশনের ভূমিকা নিয়ে মত তুলে ধরেন।

ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নির্দেশনায় আইসিটি খাতে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ডিজিটাল বিশ্বের পূর্ণ সম্ভাবনা বাস্তবায়নে আমাদের সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে অংশীদারিত্বে তরুণদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা প্রমাণ করেছি কোভিড-১৯ এর মতো সঙ্কট মোকাবিলায় ডিজিটাল রূপান্তর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দেশের আর্থ-সামাজিক কার্যক্রম চলমান রাখতে আমাদের টেলিযোগাযোগ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য ইন্টারনেটভিত্তিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে অবদান রেখে চলেছে। একসঙ্গে আমরা অনেকদূর এগিয়েছি। তবে, আমাদের এখনও অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে। একসঙ্গে কাজের মাধ্যমে আমরা এ সঙ্কটকালীন সময়ে টেকসই উপায় খুঁজে পাব। আমরা এখন এক নতুন বিশ্বের অংশ যেখানে আগের মতো সরাসরি অনেক কিছুই করা যাবে না। তাই অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করার ও ডিজিটাল উদ্ভাবনের মাধ্যমে মানুষকে সহায়তার এখনই সময়।

ওয়েবিনারে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বক্তারা কোভিড-১৯ উদ্ভূত পরিবর্তিত ও নিউ নরমাল অবস্থায় আর্থ-সামাজিক কার্যক্রম চলমান রাখতে ডিজিটাল রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন। প্রযুক্তিখাত সংশ্লিষ্টরা জানান, বৈশ্বিক মহামারি সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় ডিজিটাল প্রযুক্তির ভূমিকা প্রত্যক্ষ করেছে সারাবিশ্ব। টেকসই ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য কৌশল তৈরিতে সরকার ও বেসরকারি খাত উভয়েরই এগিয়ে আসা উচিত।

ওয়েবিনারে ‘অ্যাকসেলেরেটিং ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ডিউরিং চ্যালেঞ্জিং টাইমস’ বিষয়ে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশনস ইউনিয়নের (আইটিইউ) রিজিওনাল ডিরেক্টর আতসুকো ওকুদা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের ভারপ্রাপ্ত সিইও ও চিফ ডিজিটাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি অফিসার সোলায়মান আলম, এটুআইয়ের পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি নিহাদ কবীর, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী সেলিম আর এফ হোসেন, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী মোমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, বাংলাদেশ অনেক আগেই ডিজিটালাইজেশনের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছে। এজন্য আমরা সুফলও ভোগ করছি। বৈশ্বিক মহামারি চলাকালীন এটা আরও স্পষ্ট হয়েছে। একইসঙ্গে ডিজিটাল রূপান্তরে আমাদের প্রচেষ্টা বহুগুণে বেড়েছে। তাই কানেক্ট ২০৩০ এজেন্ডা আর সরকারের ২০৪১ লক্ষ্য একই সূত্রে গাঁথা।

একে/ওএফ