উপকূলের ১৪ জেলা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা
দেশের উপকূলের ১৪ জেলা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে সাগর উত্তাল থাকায় এবং পূর্ণিমার প্রভাবে সাগরে জলোচ্ছ্বাস তৈরি হতে পারে। এর ফলে প্লাবিত হতে পারে উপকূলের জেলাগুলো। এছাড়া এসব জেলায় ঘণ্টায় ৮০ কিমি. গতিতে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
বুধবার (২৬ মে) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের উপকূলের পাশ দিয়ে যাওয়া এ ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এ আবহাওয়াবিদ বলেন, পূর্ণিমার কারণে রাতে সাগরের পানির উচ্চতা বেড়ে যেতে পারে। এতে উপকূলে তৈরি হবে জলোচ্ছ্বাস। আমরা ধারণা করছি, উপকূলের ১৪ জেলা প্লাবিত হতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এটা আমরা বলছি।
তিনি আরও বলেন, পূর্ণিমার প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন থেকে ছয় ফুটের বেশি উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রামের জেলাগুলো এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়টির কারণে বাংলাদেশের উপকূল এলাকা বিশেষ করে খুলনা উপকূলে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও গতি ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের ১৯ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে বুধবার দুপুরের দিকে ভারতের স্থলভাগে আছড়ে পড়া অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টি বিকেলের দিকে শক্তি হারিয়ে দুর্বল হয়ে গেছে। ভারতের ডামরার উত্তর এবং বালাশোরের দক্ষিণ দিয়ে ওডিশা, উত্তর ওডিশা, পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করেছে। তবে বাংলাদেশে তিন নম্বর স্থানীয় সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, বর্তমানে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে উপকূলীয় উত্তর ওডিশা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
একে/এসএম/জেএস