ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলার রেন্ট-এ-কার ব্যবসায়ীদের কাছে বিদেশফেরত আত্মীয়কে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রিসিভ করার কথা বলে প্রতারক চক্রের সদস্যরা প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস ভাড়া করত। পরে নির্দিষ্ট স্থান থেকে চক্রটির একজন সদস্য ভাড়া করা গাড়ি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথে চক্রটির আরও কয়েকজন সদস্য গাড়িতে উঠে। ঢাকা আসার রাস্তায় সুবিধানজক স্থানে গাড়িটি থামিয়ে চালকের হাত-পা বেঁধে তাকে ফেলে দিয়ে গাড়ি নিয়ে উধাও হয়ে যেত চক্রটি।

সম্প্রতি অন্য একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এই চক্রের হাবীব মিয়া নামে এক সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে এই গাড়ি ছিনতাই চক্রের সন্ধান পায় ডিবি। তার দেওয়া তথ্য মতে চক্রের আরও সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিবি।

চক্রের গ্রেফতার বাকি পাঁচ সদস্য হলেন- মীর মিজান মিয়া, মো. ফারুক, কামাল মিয়া, মো. আল আমিন ও মোবারক। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই করা একটি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়।

শনিবার (০৫ জুন) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

হাফিজ আক্তার বলেন, আমরা অন্য একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে গাড়ি ছিনতাই চক্রের হাবীব মিয়াকে গ্রেফতার করি। পরে তাকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে গাড়ি ছিনতাই এই চক্রের সন্ধান পাই আমরা। আমাদের জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, চক্রটি বিদেশ থেকে আসা আত্মীয়কে বিমানবন্দর থেকে রিসিভ করার কথা বলে প্রাইভেটকার বা মাইক্রোবাস ভাড়া করে তা বিভিন্ন কৌশলে চালকের হাত-পা বেঁধে ছিনতাই করে উদাও হয়ে যেত। পরে বিদেশ থেকে দেশে অল্প কয়েক দিনের জন্য ঘুরতে আসা প্রবাসীদের কাছে এসব গাড়ি বিক্রি করত চক্রটি। এসব গাড়ি ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ টাকায় বিক্রি করত চক্রটি। এসব তথ্য যাচাই করে আমরা শুক্রবার (৪ জুন) নরসিংদী ও কুমিল্লা জেলার একাধিক স্থানে অভিযান চালিয়ে চক্রের আরও পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই চক্রটি এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ গাড়ি ছিনতাই করেছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে আমরা এখন পর্যন্ত তদন্তে জেনেছি, চক্রটি সব থেকে বেশি গাড়ি বিক্রি করত সিলেটে। সিলেটে ইউরোপ থেকে বিভিন্ন প্রবাসীরা দেশে বেড়াতে আসতেন নিজ বাড়িতে। তখন তারা অল্প দামে গাড়ি খুঁজতেন কয়েক মাসের জন্য। আর চক্রটির সদস্যরা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাদের কাছে এসব গাড়ি বিক্রি করত। তাই গাড়ির কেনার আগে সব তথ্য ক্রেতাদের যাচাই করে নিতে হবে। না হলে এসব গাড়ি কিনে তারা নিজেরাও বিপদে পড়ে যাবেন।

চক্রের সদস্যরা গ্রামের বিভিন্ন সহজ-সরল মানুষের কাছ থেকে অব্যবহৃত সিম কিনে ব্যবহার করত বলে তাদের এতদিন শনাক্ত করা যায়নি বলেও তিনি জানান।

এমএসি/জেডএস