ইসরাত জাহান তুষ্টি

রাজধানীর আজিমপুরে সরকারি স্টাফ কোয়ার্টারের একটি বাসা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার সকালে কোয়ার্টারের একটি বাসার বাথরুমের দরজা ভেঙে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।  

ওই শিক্ষার্থীর নাম ইসরাত জাহান তুষ্টি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। 

ফায়ার সার্ভিসের পলাশী ব্যারাক ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, তুষ্টি (শনিবার) মধ্যরাতে বাথরুমে আটকা পড়েছিলেন। তার রুমমেট অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে না পেয়ে ৯৯৯-এ ফোন দিলে আমরা এখানে (সকালে) এসে বাথরুমের দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

তিনি জানান, দুজন শিক্ষার্থী মিলে স্টাফ কোয়ার্টারের নিচতলায় একটি বাসায় সাবলেট থাকতেন। সকালে তার রুমমেট ঘুম থেকে উঠে টয়লেটের দরজা ভেতর থেকে আটকানো দেখতে পান। তবে ভেতরে কলের পানি পড়ছিল।

তুষ্টির রুমমেট রাহনুমা তাবাসসুম রাফি। তিনি ঢাবির ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ।

রাফি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমি গতকাল রাত ১২টার দিকে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সে কখন বাথরুমে গেছে বলতে পারব না। সকালে দীর্ঘ সময় ধরে বাথরুম বন্ধ পাওয়া যায়। এ সময় ভেতর থেকে কেউ সাড়া দিচ্ছিল না। তখন ভেন্টিলেটর দিয়ে দেখা যায়, সে বাথরুমে পড়ে আছে। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল তুষ্টি বৃষ্টিতে ভিজেছিল। আগে থেকেই তার শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমা ছিল। সে নিয়মিত ইনহেলার ব্যবহার করত।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, একটি ঘটনা শেষ হতে না হতেই আরও একটি ঘটনা ঘটে গেল। আমাদের জন্য অনেক বড় দুঃসংবাদ। আমরা তার মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টা করছি।

ইসরাত জাহান নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার আলতু মিয়ার মেয়ে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের ৪২২ নম্বর কক্ষে থাকতেন। তবে হল বন্ধ থাকায় আজিমপুর সরকারি স্টাফ কোয়ার্টারে সাবলেট থাকতেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্টাফ কোয়ার্টারের বাথরুম থেকে ঢাবি ছাত্রীকে ফায়ার সার্ভিস অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃতদেহটি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

গত মাসেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। হাফিজুরের মৃত্যু সম্পর্কে জানা যাচ্ছে, ঢাকা মেডিকের কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের গেটের সামনে এক ডাব বিক্রেতার কাছ দা কেড়ে নিয়ে তিনি নিজের গলা কাটেন। খবর পেয়ে পুলিশ লোকজনের সহায়তার ধরে রিকশায় করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় রিকশা থেকে লাফ দেয়। এরপর তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা খারাপ দেখে তাকে ওটিতেও নেওয়া হয়। এর মধ্যে তিনি মারা যান।

হাফিজুর রহমান

তবে তখন তার পরিচয় কেউ জানতে পারেনি। ঢামেক হাসপাতালের মর্গেই ছিল তার লাশ। এক সপ্তাহের বেশি সময় পর হাফিজুরের মরদেহ শনাক্ত করে তার পরিবার।  

হাফিজ এলএসডি নামে একটি মাদক নিয়ে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন বলে এখন জানা যাচ্ছে।  

এইচআর/এসএএ/এনএফ/ওএফ