স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম

‘পরিবেশকে ধ্বংস করে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়’ বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। 

শনিবার (৫ মে) বিকেলে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ‘টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা ও স্থপতি’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। 

মন্ত্রী বলেন, পরিবেশ ধ্বংস এবং পৃথিবীর ভারসাম্য নষ্ট করে উন্নয়ন করলে সে উন্নয়ন টেকসই হবে না। টেকসই উন্নয়নের জন্য অবশ্যই পরিবেশ ও প্রতিবেশকে প্রাধান্য দিতে হবে।

পরিকল্পনাবিদ, স্থপতিসহ সভায় অংশ নেওয়া সংশ্লিষ্ট সবার উদ্দেশ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরে আবাসিক এলাকাগুলোতে এমন কোনো ভবন করতে দেওয়া যাবে না, যার পাশে রাস্তা থাকবে না, খোলা জায়গা, ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ও সেপ্টিক ট্যাংক, স্কুল, খেলার মাঠ এবং স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা থাকবে না। বাসা বা অ্যাপার্টমেন্টের ব্যবস্থা না থাকলে নগরবাসীকে সেই বাসা ভাড়া অথবা অ্যাপার্টমেন্ট না কেনারও পরামর্শ দেন তিনি।

তাজুল ইসলাম বলেন, শহরের সব সুযোগ-সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দিতে সরকার গ্রামকে শহর বানানোর যে উদ্যোগ নিয়েছে, রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় শহরের পরিবেশের বর্তমান অবস্থা দেখলে গ্রামের মানুষ এমন শহর কখনোই চাইবে না।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গ্রামকে শহরে রূপান্তরিত এমনভাবে করতে হবে, যাতে গ্রামের বৈচিত্র্য বিনষ্ট না হয়। গ্রামের নির্মল বাতাসের পরিবর্তে কার্বনডাই অক্সাইড, কার্বন মনো-অক্সাইড, সালফার, ক্রোমিয়াম ও ক্যাডমিয়াম যুক্ত বাতাস মানুষকে নিতে হয়। 

মন্ত্রী আরও বলেন, শহরের সকল সুযোগ-সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দিতে হলে ক্লাস্টার পদ্ধতিতে করতে হবে। এ পদ্ধতি ছাড়া শহরের সকল নাগরিক সুযোগ-সুবিধা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া কঠিন হবে। বাসযোগ্য করে গড়ে তোলা সম্ভব হবে না।

রাজধানীর জলজট নিরসনে দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ সমস্যা নিরসনে সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে এবং আরও সচেতনতার পরিচয় দিতে হবে। শহরকে ময়লা-আবর্জনা থেকে মুক্ত করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের দায়িত্ব।

ওয়াসা থেকে ২৬টি খাল দুই সিটি করপোরেশনকে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের অধীনে থাকা রাজধানীর সকল খাল ও জলাশয় খুব শিগগিরই উত্তর সিটি করপোরেশনের নিকট হস্তান্তর করা হবে।

মন্ত্রী জানান, রাজধানীসহ সারাদেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ইন্সেরশন প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে যাচ্ছে সরকার। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনসহ কয়েকটি সিটি করপোরেশনে ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি। এছাড়া বর্জ্য কালেকশনের একটি মডেল নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট আয়োজিত অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্থপতি ও পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব। 

এসএইচআর/এইচকে