একদিকে যানজট, আরেকদিকে পরিবহন সংকট
সন্ধ্যার পর রাজধানীর সড়কে যানজট
রোববার দুপুর থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি ঝরেছে রাজধানীতে। সন্ধ্যার পরও বৃষ্টির এ ধারা অব্যাহত ছিল। বৃষ্টিতে ঢাকার বিভিন্ন সড়কে জমে যায় পানি, সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের। এতে সন্ধ্যায় অফিস শেষে ঘরমুখী মানুষ পড়েন ভোগান্তিতে।
রোববার (৬ জুন) সন্ধ্যার পর রাজধানীর কিছু কিছু সড়কে দেখা যায় তীব্র যানজট। আবার কোনো কোনো সড়কে দেখা যায় বাসই নেই। একদিকে যানজট, আরেকদিকে গণপরিবহন সংকটে নাকাল হন ঘরমুখী মানুষ। এর সঙ্গে যুক্ত হয় মাথার ওপর গুটিগুটি বৃষ্টি।
বিজ্ঞাপন
বৃষ্টিতে আটকে পড়া অনেকে গাড়ির জন্য ঘণ্টার পর পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেছেন। এরপরও বাসে উঠতে পারেননি। করোনার কারণে গণপরিবহনগুলো অর্ধেক যাত্রী বহন করায় সংকট আরও বেড়েছে। সন্ধ্যার পর সড়কে বেশিরভাগ বাসের দরজাই ছিল বন্ধ, মাঝপথে যাত্রী নেয়নি কেউ। ফলে বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা চরম হতাশ হন। অনেকে হেঁটেই বাসার দিকে রওনা হন।
রাজধানীর শান্তিনগর থেকে উত্তরা যাওয়ার জন্য গণপরিবহনে উঠতে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন ওহিদুর রহমান নামের একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে অফিসেই অনেকক্ষণ অপেক্ষা করলাম। কিন্তু রাত হয়ে যাচ্ছে দেখে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই সড়কে বের হলাম। তবে কোনো বাসেই উঠতে পারছি না।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, দুই সিটে একজন করে যাত্রীপূর্ণ অবস্থায় গেট বন্ধ রেখে বাসগুলো আসছে। তাই কোনো বাসেই উঠতে পারছি না। এদিকে রাস্তায় এক ধরনের যানজট সৃষ্টি হয়েছে। শত শত মানুষ বৃষ্টিতে ভিজছেন। তবুও বাসে উঠতে পারছেন না।
শাহজাদপুর মেইন রোড থেকে গুলিস্তানের বাসে ওঠার চেষ্টা করছিলেন অনিক আহমেদ নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, একদিকে রাস্তায় যানজট লেগে আছে, অন্যদিকে বৃষ্টি ঝরছে। কেউ বাসে উঠতে পারছেন না। কারণ সব বাসের গেট বন্ধ, মাঝপথে কোনো যাত্রী তারা তুলছে না।
এ সড়কেই চলাচলকারী ভিক্টর ক্লাসিক বাসের চালক নজিবর আলী বলেন, সন্ধ্যা থেকেই সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। অফিস শেষে চাকরিজীবীরা রাস্তায় বেরিয়ে এসেছেন ঘরে ফেরার জন্য কিন্তু তারা বাসে উঠতে পারছেন না। এ কারণে যানজট বেড়েছে।
তিনি বলেন, বাসে যেসব যাত্রী আছেন, তারা বাসের গেট খুললেই ক্ষেপে যান। আর বলেন এমনিতেই বেশি ভাড়া নিচ্ছো, আবার দাঁড়িয়ে যাত্রী নেবে? সে কারণে আমরাও বাসের গেট বন্ধ রেখেছি। প্রতিটি সড়কেই অসংখ্য মানুষ দেখা যাচ্ছে যারা বাসে ওঠার জন্য চেষ্টা করেও উঠতে পারছেন না।
সন্ধ্যার পর রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বাড্ডা পর্যন্ত লম্বা যানজট দেখা গেছে। মহাখালী থেকে বনানী পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট লেগে যায়। মহাখালী ফ্লাইওভার পার হয়ে আবার জাহাঙ্গীর গেইট থেকে বিজয় সরণি সিগন্যাল পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। তবে মগবাজার, উত্তরা, মিরপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় যথেষ্ট বাসও ছিল না।
গণপরিবহন সংকটে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা ও রাইডে চালিত বাইকগুলো বেশি ভাড়া নেয়। বাড্ডা লিঙ্ক রোড থেকে মুগদাগামী এক সংবাদকর্মী বলেন, অনেকক্ষণ ধরে সিএনজির জন্য অপেক্ষা করছি। কিন্তু সড়কে খুব বেশি সিএনজি নেই। যেগুলো আসছে, সেগুলো অনেক বেশি ভাড়া চাচ্ছে।
এএসএস/আরএইচ/জেএস