হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত সাবেক আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফীর হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইমাম ওলামা সমন্বয় ঐক্য পরিষদ।

বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই দাবি জানায় তারা। 

পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ইসমাইল হোসাইন বলেন, হেফাজতে ইসলামের আমীর উপ-মহাদেশের শ্রেষ্ঠ আলেমে দ্বীন হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছে। আহমদ শফীর মৃত্যুর আগে হাটহাজারী মাদরাসায় ছাত্রদের দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়েছিল। তড়িঘড়ি করে হাটহাজারী মাদরাসার নতুন কমিটি করে অনেককে পদে বসানো হয়। কিন্তু শফী হুজুরের কোন সন্তানকে প্রতিষ্ঠানে রাখা হয়নি। 

তিনি আরও বলেন, আবার হেফাজতে ইসলামের কমিটি গঠন করা হলো। কিন্তু শফী হুজুরের কোনো সন্তানকে ভালো স্থানে রাখা হয়নি। এমনকি কমিটিতেই রাখা হয়নি। আহমদ শফীর ছেলে মাওলানা আনাসকে জানাজায় আসতে দেয়নি। তাতে কি বোঝা যায়? অবশ্যই আহমদ শফীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকারীদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাই। 

মাওলানা ইসমাইল হোসাইন আরও বলেন, হেফাজতে ইসলামের কমিটি গঠনের পরেই মাদরাসা ছাত্রদের দিয়ে ভাস্কর্য বিরোধী মিছিল করানো হয়েছে। দেশের কওমি মাদরাসাগুলোকে আওয়ামীপন্থী লোকদের বিরুদ্ধে দাঁড় করানো হয়। আমি বলেত চাই, সরকারের সাথে সমস্যা তৈরির জন্য তড়িঘড়ি করে হেফাজতের কমিটি গঠন করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি এটাই প্রমাণ করে। 

মানবন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিষদের মহাসচিব মাওলানা শাহ মো. ওমর ফারুক, কাজী মাওলানা আবদুল কাইয়ুম, হাফেজ আবদুল আজিজ, মাওলানা হারুনুর রশিদ, হাফেজ মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা মোহাম্মদ ইউনুস, মাওলানা মুফতি সাইফুল্লাহ সাদী প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ সালে ১০৩ বছর বয়সে শাহ আহমদ ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বার্ধক্যজনিত দুর্বলতার পাশাপাশি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন।

মৃত্যুর আগে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে মহাপরিচালকের পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন আহমদ শফী।

তার মৃত্যুর ঘটনার তিন মাস পর হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। আসামি করা হয় হেফাজতের ৩৬ জনকে। আহমদ শফীর মৃত্যুতে মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী ও তার সমর্থকদের দায়ী করা হয়।

এছাড়াও আহমদ শফীকে নির্যাতন ও মানসিক নিপীড়ন চালিয়ে হত্যার অভিযোগ করে এর বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছেন ৩১৩ আলেম। 

এইচএন/ওএফ