হাওরে ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণ করা হলে কৃষি উৎপাদনে ক্ষয়ক্ষতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে হাওর এলাকায় বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন প্রকল্প সংক্রান্ত এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন সংস্থাটির সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর তেরুয়াকি ফুজি।

সভায় উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বন্যায় যাতে হাওরের ফসল নষ্ট না হয়, কৃষকরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে লক্ষ্যে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা আশা করছি, জাইকার আর্থিক সহযোগিতায় প্রাথমিকভাবে ১১টি হাওরে ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণ করা গেলে কৃষি ক্ষতি অনেকটা কমে আসবে।

তিনি আরও বলেন, এই প্রকল্প হাওর এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো হাওর এলাকায় বন্যা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বোরো ধানকে আগাম বন্যা থেকে রক্ষা করা। একই সঙ্গে টেকসই ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করা।

দেশে হাওর এলাকার ৫টি জেলা সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনাকে প্রকল্প এলাকা হিসেবে নেওয়া হয়েছে। ৫টি জেলার মধ্যে সিলেটে ১টি, সুনামগঞ্জের ৬টি, হবিগঞ্জের ২টি, কিশোরগঞ্জের ৪টি এবং নেত্রকোনা ২টি সহ মোট ১১ টি হাওরকে প্রাথমিকভাবে এ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় প্রস্তাবিত অবকাঠামো সমূহ হচ্ছে হাওর এলাকায় ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণ: ৪৫০.১৯  কিলোমিটার; খাল/নদী পুন:খনন ৭৭.৭০০ কিলোমিটার; ইরিগেশন ইনলেট ৫৮টি; Constitution of Flood Fuse- ৫৮টি; রেগুলেটর /বক্স ড্রেনেজ আউটলেট -২২টি, থ্রেশিং অ্যান্ড ড্রাইয়িং ফ্লোর (চাতাল)-৯টি, পানি ব্যবস্থাপনা গ্রুপের জন্য অফিস বিল্ডিং নির্মাণ -৮টি; গেট মেরামত -৬টি।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়নে প্রকল্পটির সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২,২৪৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে ৫৮৪ কোটি টাকা এবং অবশিষ্ট ১,৬৬৪ কোটি টাকা দেবে জাইকা। ২০২৬ সালের মার্চে প্রকল্পটি একনেকে উপস্থাপনের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রস্তাবিত মেয়াদকাল জুলাই ২০২৬ থেকে জুন ২০৩৩ পর্যন্ত।

পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনায় বলা হয়েছে, এ প্রকল্পের আওতায় কৃষি উৎপাদন উন্নয়নের পাশাপাশি আবহাওয়ার প্রাথমিক সতর্কীকরণ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি খাতের উন্নয়ন, স্থানীয় পর্যায়ে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।

এমএম/এআইএস