নগরজীবনের কোলাহল থেকে একটু স্বস্তি পেতে চট্টগ্রামবাসীরা এখন ভিড় জমাচ্ছেন কল্পলোক আবাসিকের পাশে কর্ণফুলী নদীর তীরে। এখানে প্রতিদিন এক দারুণ পরিবেশ তৈরি হয়—নদীর বুকে ভেসে থাকা লাইটার জাহাজ, ছুটে চলা ইঞ্জিনচালিত নৌকা, আর ঢেউয়ের ছোঁয়া লাগা শীতল বাতাস মনকে জুড়িয়ে দেয়। চাক্তাই-কালুরঘাট আউটার রিং রোড প্রকল্পের অধীনে তৈরি এই নদীর পাড়ের রাস্তাটি এখন নগরবাসীর কাছে এক নতুন গন্তব্য। বিশেষ করে ছুটির দিন বিকেলে এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে অনেকেই ছুটে আসেন।

শুক্রবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, কর্ণফুলীর তীরে নির্মিত বেড়িবাঁধ এবং ব্লকের ওপর অসংখ্য মানুষ বসে বা দাঁড়িয়ে নদীর অপার সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। কেউ কেউ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরিবিলি সময় কাটাচ্ছেন, আবার কেউ বন্ধুদের সঙ্গে হাসি-গল্পে মেতে উঠে ছবি তুলছেন। কোথাও কোথাও বন্ধুদের দলবেঁধে গান গাইতেও দেখা যায়। অনেকেই আবার পরিবারকে নিয়ে নৌকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন কর্ণফুলীর বুকে, যা এই স্থানটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিছবাহুল হক বলেন, প্রথমবার বন্ধুদের সঙ্গে এখানে এসে ভেবেছিলাম সাধারণ একটা বেড়িবাঁধের জায়গা। কিন্তু কর্ণফুলীর সৌন্দর্য দেখে সত্যিই অবাক হয়েছি। বিকেলের আলো, নদীর ঢেউ আর বাতাসে তৈরি হয় এক অপূর্ব পরিবেশ। আড্ডা, হাঁটা বা ছবি তোলার সুন্দর জায়গা এটা।

পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী রাহাতুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামে তেমন বিনোদনকেন্দ্র নেই বললেই চলে। ছুটির দিনে ব্যস্ততা থেকে মুক্তি পেতে পরিবার নিয়ে এখানে আসি। নদী দেখতে আগে পতেঙ্গা যেতে হত, এখন কাছে সুন্দর স্থান গড়ে উঠেছে। 

বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, এমনে প্রতিদিন বিকেলে এখানে পর্যটকরা আসেন। তবে ছুটির দিনে  প্রচুর লোক সমাগম হয়। তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা সজাগ রয়েছি।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নেওয়া কালুরঘাট–চাক্তাই সড়ক ও বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। পরবর্তীতে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকায়।

এমআর/এমএন