চবিতে সংঘর্ষ : মামলা হয়নি, গ্রেপ্তারও নেই
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী এবং স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর আশপাশের এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এছাড়া ২ নম্বর গেট এলাকার বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ এবং জোবরা গ্রামের অনেক পুরুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
এদিকে ক্যাম্পাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বাড়ানো হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা আজ রাত ১২টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাটহাজারী থানার একজন কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় এখনো পর্যন্ত মামলা হয়নি। এছাড়া কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি।
এদিন সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, পার্শ্ববর্তী জোবরা গ্রাম প্রায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। গ্রামবাসী বাইরে বের হতে সাহস পাচ্ছেন না। ক্যাম্পাস থেকে অনেক শিক্ষার্থীও উৎকণ্ঠায় আবাসস্থল ত্যাগ করছেন। সীমিত আকারে চালু রয়েছে শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকানপাট।
বিজ্ঞাপন
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, সংঘর্ষের ঘটনায় প্রোভিসি, প্রক্টরসহ দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। গত রোববার রাতে ঘটনাটির তদন্তে ২১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। বর্তমানে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র্যাবের সমন্বয়ে যৌথবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকটের কারণে অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের ভবনে ভাড়া থাকেন। এ পরিস্থিতিতেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতে দ্রুত সমস্যার সমাধান চেয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দীন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সার্বিকভাবে চেষ্টা করেছে বিষয়টি সুন্দরভাবে সমাধানের জন্য। কিন্তু বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার ও এলাকাবাসীর কারণে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পরে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশের সহায়তায় সন্ধ্যার আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আখতার বলেছেন, চাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পরপরই এ ঘটনা ঘটেছে। এতে ভিন্ন কোনো কারণও থাকতে পারে বলে তিনি ইঙ্গিত দেন। ঘটনায় হাটহাজারী থানা থেকে কোনো সহায়তা পাইনি। সেনাবাহিনী, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা ও বিজিবি অনেক পরে সাড়া দিয়েছে।
আরও পড়ুন
প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে ২ নম্বর গেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ভাড়া বাসায় ঢোকার সময় দারোয়ানের সঙ্গে কথা কাটাকাটি থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এরপর রোববার দিনভর শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, মারামারি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
উল্লেখ্য, চবির পাশের জোবরা গ্রামের বহু মানুষ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। কেউ দোকানপাট চালান, কেউ অটোরিকশা-রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। আবার অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিও করেন।
আতিকুর রহমান/এমআর/এমএন