চীনে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীদের পাচার করে যৌনপল্লীতে বিক্রির অভিযোগে চার সদস্যের একটি মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-৪।

সম্প্রতি চীন থেকে পালিয়ে আসা এক তরুণীর মামলার ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- চক্রের মূলহোতা আব্বাস মোল্লা (৩৬), জাহিদুল ইসলাম ওরফে বাবু (৩১), মিনার সরদার (৩০) ও মোহাম্মদ রিপন শেখ (২৮)। 

বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৪-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলম বলেন, ভুক্তভোগী তরুণী পিরোজপুরের একটি বিউটি পার্লারে চাকরি করতেন। এ বছরের মার্চে ফেসবুকে চীনে উচ্চ বেতনের চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে বাবু নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। পরে বাবুর পরামর্শে তার বোনসহ ঢাকায় আসেন। চক্রের সদস্যরা তাদের পাসপোর্ট ও ভিসার কাজ সম্পন্ন করে ১৩ জুন চীনে পাঠায়। তবে সেখানে গিয়ে তাদের বিউটি পার্লারে চাকরি না দিয়ে জোরপূর্বক যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেয় চক্রটি।

তিনি বলেন, ভুক্তভোগী জানান- চক্রের সদস্যরা অনৈতিক কাজের ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল ও শারীরিক নির্যাতন চালাত। পরে কৌশলে পালিয়ে তিনি দেশে ফেরেন এবং ৩০ সেপ্টেম্বর শাহ আলী থানায় মামলা দায়ের করেন।

মাহবুব আলম বলেন, ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ছায়াতদন্ত শুরু করি। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চক্রের মূলহোতা ও সহযোগীদের অবস্থান শনাক্ত করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামিরা স্বীকার করেছে, তারা প্রায় ১০ বছর ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তরুণীদের আকর্ষণীয় বেতনের চাকরি ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চীনে পাচার করে আসছিল।

তিনি আরও বলেন, চক্রটি পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন, এনআইডি ও ভিসা প্রসেসিংয়ে যোগসাজশের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে নথিপত্র তৈরি করত। আমাদের কাছে তথ্য আছে, চক্রটি অন্তত ২০ জন নারীকে চীনে পাচার করেছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। গ্রেপ্তার চারজন ছাড়াও দেশের আরও কয়েকজন এবং কিছু চীনা নাগরিক এই চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এমএসি/এমএসএ