বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো কমিউনিকেশন সামিট
এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড-এর সৌজন্যে এবং ওয়ালটন গ্রুপের সঞ্চালনায় রাজধানীর লে মেরিডিয়ান হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৪তম কমিউনিকেশন সামিট। বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের এই ফ্ল্যাগশিপ আয়োজনে অংশ নেন দেশের মার্কেটিং, অ্যাডভার্টাইজিং, ব্র্যান্ডিং, মিডিয়া, পাবলিক রিলেশনস এবং ক্রিয়েটিভ কমিউনিকেশন খাতের শীর্ষ পেশাজীবীরা।
শনিবার অনুষ্ঠিত এই আয়োজনটির এই বছরের প্রতিপাদ্য ছিল— “কেয়স, কালচার অ্যান্ড ক্রিয়েটিভিটি: রিইমাজিনিং দ্য কমিউনিকেশন ক্যানভাস।”
বিজ্ঞাপন
সামিটের আলোচনায় বক্তারা জানান, যোগাযোগ শিল্প এখন দ্রুত বদলে যাওয়া বাস্তবতার মুখোমুখি। ডিজিটাল পরিবর্তন, নতুন ধরনের দর্শক আচরণ আর সাংস্কৃতিক পরিবর্তন—সবকিছু মিলেই ব্র্যান্ডের বার্তা পৌঁছে দেওয়া আরও কঠিন হয়ে উঠছে। তাই গল্প বলার নতুন পথ, দর্শকের সঙ্গে আরও অর্থবহ সম্পর্ক এবং সৃজনশীল দৃষ্টিভঙ্গির রূপান্তর—এসব নিয়ে সামিটে বিস্তৃত আলোচনা হয়।
অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের গ্রুপ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী সম্পাদক সাজিদ মাহবুব বলেন, “আজ যোগাযোগের দুনিয়া আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে দ্রুত বদলে যাচ্ছে। চারপাশের অনিশ্চয়তা আর তথ্যের ভিড়ে পথ খুঁজে নিতে সৃজনশীলতাই এখন আমাদের সবচেয়ে শক্ত ভরসা। এই সামিট মনে করিয়ে দেয়—সংস্কৃতি, মানবিকতা এবং সৃজনশীল চিন্তা মিলেই তৈরি হয় এমন ব্র্যান্ড–গল্প, যা দর্শকের কাছে সত্যিকারের সংযোগ তৈরি করে এবং ব্যবসাকেও এগিয়ে নিতে সাহায্য করে।”
বিজ্ঞাপন
দিনব্যাপী আয়োজনে ৩টি কিনোট সেশন, ৪টি প্যানেল ডিসকাশন ও ২টি কেস স্টাডির সমন্বয়ে ব্র্যান্ড–কমিউনিকেশন শিল্পের চলমান প্রবণতা, ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ এবং পরিবর্তনশীল বাস্তবতা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়।
কি–নোট সেশনগুলোতে বক্তারা তুলে ধরেন—ব্যবসায়িক সমস্যা সমাধানে সৃজনশীল ভাবনার কার্যকর প্রয়োগ, ডিজিটাল যুগে ব্র্যান্ডের আত্মতুষ্টি থেকে তৈরি হওয়া ঝুঁকি—যার বাস্তব উদাহরণ হিসেবে উঠে আসে “জোহরান মামদানি” ক্যাম্পেইনের বিশ্লেষণ—এবং ব্র্যান্ডের তথ্যজট ভেদ করে স্পষ্ট, গ্রহণযোগ্য ও প্রভাবশালী বার্তা তৈরির প্রয়োজনীয় কাঠামো।
নিজের কি–নোটে তানজীন আলম তুলে ধরেন—সত্যিকারের সৃজনশীলতা তখনই ফল দেয়, যখন তা বাস্তব ব্যবসায়িক সমস্যা সমাধানকরে। তিনি বলেন, মানুষের অভ্যাস বদলাতে হলে আগে বুঝতে হবে কেন বদলানো দরকার। তাই ব্র্যান্ডের উচিত প্রচলিত ভাবনার বাইরে গিয়ে আরও ধারালো, অন্তর্দৃষ্টি–নির্ভর কৌশল তৈরি করা। তার মতে, একেক সময় পাঁচ সেকেন্ডের ঝলক, এক টুকরো বুদ্ধিদীপ্ত বাঁক বা শক্ত সাংস্কৃতিক সংকেত—অতি প্রযোজনা ছাড়াই দর্শকের মনোযোগ কাড়তে পারে।
প্যানেল আলোচনাগুলোতে উঠে আসে—পিচ–নির্ভর সম্পর্কের সীমাবদ্ধতা পেছনে ফেলে ক্লায়েন্ট–এজেন্সির পার্টনারশিপভিত্তিক কাজের পরিবেশ গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা। আলোচনা হয় কনটেন্টের পরিমাণ বাড়ার সঙ্গে সৃজনশীলতার গভীরতা বজায় রাখার চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ–মনস্ক, উদ্দেশ্য–নির্ভর মার্কেটিং নেতৃত্বের দিকনির্দেশনা নিয়ে। পাশাপাশি, দীর্ঘমেয়াদে ব্র্যান্ডের ভ্যালু তৈরি করতে অর্থ, অনুভূতি ও সংস্কৃতিভিত্তিক কৌশলের গুরুত্বও বিশেষভাবে জায়গা পায়। এছাড়াও, কেস স্টাডি সেশনগুলোতে বিশ্লেষণ করা হয়—ব্র্যান্ডকে এখন কোন সাংস্কৃতিক ও আচরণগত পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে হচ্ছে এবং তার প্রভাব কোথায় পড়ছে।
জেডএস