বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জ্যেষ্ঠ নেতাদের একত্রিত করে একটি নেটওয়ার্কিং ও জ্ঞান-বিনিময় অনুষ্ঠানের ‘ফার্মাকানেক্ট’ আয়োজন করেছে ঢাকার ভারতীয় হাই কমিশন।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) অনুষ্ঠানটি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ওষুধশিল্প-সংক্রান্ত প্রদর্শনী সিপিএইচআই–পিএমইসি ইন্ডিয়া ২০২৫-এ বাংলাদেশি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর আসন্ন অংশগ্রহণের পূর্বে আয়োজন করা হয়।

‘ফার্মাকনেক্ট’ ভারত ও বাংলাদেশের ওষুধশিল্পের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের পরিপূরক সম্পর্ককে তুলে ধরেছে। ভারতের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক ওষুধশিল্প ও বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল উৎপাদন সক্ষমতা একত্রে ক্রিয়াশীল হয়ে কীভাবে সাপ্লাই চেইনগুলোকে শক্তিশালী করতে, নতুন নতুন প্রযুক্তি অর্জন করতে এবং বাণিজ্যিক সম্পর্কগুলোকে আরও গভীর করতে পারে, সেটা এই অনুষ্ঠানটিতে দেখানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানে হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে ওষুধশিল্পের কৌশলগত তাৎপর্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, ভারত বাংলাদেশের জন্য একটি আস্থাভাজন ও নির্ভরযোগ্য অংশীদার হয়ে বিরাজমান– বিশেষত এপিআই সোর্সিং, প্রক্রিয়াগত প্রযুক্তি এবং ওষুধ উৎপাদনের যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে—এবং তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই খাতে অধিকতর সহযোগিতা শুধু শিল্পোন্নয়নকেই ত্বরান্বিত করবে না, বরং এই অঞ্চলজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য স্বাস্থ্যসেবাও নিশ্চিত করবে।

হাই কমিশনার ভার্মা এই আত্মবিশ্বাস ব্যক্ত করেন যে, ফার্মা কানেক্ট নতুন ব্যবসায়িক সংযোগ বিনির্মাণের ক্ষেত্রে সহায়তা করবে এবং একটি ভবিষ্যৎমুখী, উদ্ভাবন-নির্ভর কাঠামোতে ভারত–বাংলাদেশ সম্পৃক্ততাকে আরও সম্প্রসারিত করে তুলবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ (বিএপিআই)-এর সভাপতি আবদুল মুকতাদিরসহ শীর্ষস্থানীয় শিল্প ব্যক্তিবর্গের বক্তব্য উপস্থাপিত হয়, যারা ওষুধ শিল্পে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক সম্প্রসারণ এবং প্রযুক্তি স্থানান্তর, গবেষণা ও উন্নয়ন (আর অ্যান্ড ডি) অংশীদারত্ব ও সাপ্লাই-চেইন একীকরণের মতো ক্ষেত্রসমূহে ভারতের সঙ্গে গভীরতর সহযোগিতার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশি ওষুধশিল্পের প্রতিনিধিদের দৃঢ় আস্থা প্রকাশ করেন যে, এই ধরনের সম্পৃক্ততা আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতাকে জোরদার করবে। প্রযুক্তিতে অ্যাক্সেসকে সহজতর করবে, সাপ্লাই-চেইনের স্থিতিশীলতার উন্নয়ন ঘটাবে এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন নতুন পথ উন্মোচন করবে।

স্বাস্থ্য ও ওষুধশিল্প খাতে দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা আরও গভীর করার লক্ষ্যে হাইকমিশনের বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়।

বহু বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ২৫ থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য সিপিএইচআই–পিএমইসি ইন্ডিয়া ২০২৫-এ অংশগ্রহণ করবে, যেটি বিশ্বব্যাপী উৎপাদনকারী, উদ্ভাবক, বিনিয়োগকারী ও নীতিনির্ধারকদেরকে সংযুক্তকারী অন্যতম বৃহত্তম শিল্পমঞ্চ হিসেবে স্বীকৃত।

এনআই/বিআরইউ