মানবপাচার মামলায় কার্যকর বিচার নিশ্চিত করতে ঢাকায় ‘বেঞ্চবুক’ উদ্বোধন
মানব পাচার সংক্রান্ত মামলায় ভুক্তভোগীকেন্দ্রিক বিচারপ্রক্রিয়া শক্তিশালী করা এবং বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করতে ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হলো ‘মানব পাচার মামলায় কার্যকর ফৌজদারি বিচারিক প্রক্রিয়া’ বিষয়ক বেঞ্চবুক। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, আইওএম ও ইউএনওডিসির সহযোগিতায় প্রণীত এই প্রকাশনাটি বিচারকদের জন্য ব্যবহারিক দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে।
মানব পাচার সংক্রান্ত মামলায় ভুক্তভোগীকেন্দ্রিক বিচারপ্রক্রিয়া শক্তিশালী করা এবং বাংলাদেশের বিচারিক প্রক্রিয়া আরও কার্যকর করার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) ঢাকায় বেঞ্চবুকটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
বিজ্ঞাপন
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ সংক্রান্ত কার্যালয়ের (ইউএনওডিসি) সহযোগিতায় সরকারের এই উদ্যোগটি বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহারিক দিকনির্দেশনা প্রদান করবে। এর মাধ্যমে মানব পাচার মামলায় ন্যায়সংগত, সামঞ্জস্যপূর্ণ ও ট্রমা-সংবেদনশীল বিচার নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বেঞ্চবুকটি।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (কোইকা) আর্থিক সহায়তায় প্রণীত এই প্রকাশনাটি বিচারকদের মানবপাচার সম্পর্কিত মামলায় সঠিক ও ধারাবাহিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে এবং একই সঙ্গে ভুক্তভোগীদের অধিকার ও মর্যাদা সুরক্ষিত রাখতে ভূমিকা রাখবে।
বিজ্ঞাপন
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন এবং বিচার বিভাগের নেতৃত্বে গঠিত অ্যাডভাইজরি এক্সপার্ট কমিটির পরামর্শ এবং বিচার খাতের অংশীদারদের সহযোগিতায় প্রস্তুত করা হয়েছে বেঞ্চবুকটি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা বলেন, মানবপাচার দমন ও প্রতিরোধ আইন, ২০১২ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত মানবপাচার ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের দক্ষতা বৃদ্ধিই এই বেঞ্চবুকের মূল লক্ষ্য। এটি জাতীয় আইন ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ন্যায়সংগত, কার্যকর এবং ট্রমা-সংবেদনশীল বিচার নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দপ্তরের সহযোগিতা বিভাগের প্রধান মিখাল ক্রেজা বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই উদ্যোগকে সমর্থন করতে পেরে গর্বিত। এটি মানবপাচার মোকাবিলায় বাংলাদেশের বিচারিক প্রতিক্রিয়া শক্তিশালী করবে এবং ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা ও মৌলিক অধিকার রক্ষায় যৌথ প্রতিশ্রুতিকে আরও জোরদার করবে।
কোইকা বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সুজিন কং বলেন, বাংলাদেশের বিচার খাতকে মানব পাচার মোকাবিলায় আরও সক্ষম করে তোলার প্রচেষ্টায় কোইকা অংশ নিতে পেরে গর্বিত। ভুক্তভোগীর মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই বেঞ্চবুক একটি বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ, যা বিচারপ্রক্রিয়ায় ধারাবাহিকতা ও ভুক্তভোগী-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি নিশ্চিত করবে।
অনুষ্ঠানে আইওএম বাংলাদেশের অফিসার-ইন-চার্জ ক্যাথরিন নর্থিং এবং ইউএনওডিসি সদর দপ্তরের মানবপাচার ও অভিবাসী চোরাচালান বিভাগে ডেপুটি প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর জি আই লি সহ অন্যান্য বক্তারাও বক্তব্য রাখেন।
আইওএম ও ইউএনওডিসি থেকে পাঠানো যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
জেইউ/এসএম