চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বাহুলী এলাকায় ময়লার ভাগাড় | ছবি- ঢাকা পোস্ট

চট্টগ্রামের অন্যতম প্রাচীন পৌরসভা পটিয়া। অথচ প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৩৫ বছরেও এখানে গড়ে ওঠেনি কোনো স্থায়ী ডাম্পিং স্টেশন। এর ফলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে খোলা জায়গাতেই জমে উঠেছে হাজার টনের বেশি ময়লার স্তূপ। বর্জ্যের তীব্র দুর্গন্ধ, মশা-মাছির উপদ্রব আর বিষাক্ত বাতাসে স্থানীয় বাসিন্দা ও মহাসড়ক ব্যবহারকারী যাত্রীদের জীবন এখন অতিষ্ঠ।

১৯৯০ সালের ৯ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত পটিয়া পৌরসভা মাত্র এক বছরের মাথায় প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পেলেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় রয়ে গেছে আদিম দশা। ৪ বর্গমাইলের এই জনপদে লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। প্রতিদিনের বিপুল পরিমাণ গৃহস্থালি ও বাণিজ্যিক বর্জ্য নিয়ে বিড়ম্বনার শেষ নেই।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বাহুলী এলাকায় খোলা জায়গায় বিশাল এলাকাজুড়ে ফেলে রাখা হয়েছে আবর্জনা। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড থেকে প্রতিদিন কয়েক’শ টন বর্জ্য এখানে এনে ফেলা হয়। এলাকাটিতে পৌঁছালে উৎকট গন্ধে দাঁড়িয়ে থাকাই দায়। বর্ষা মৌসুমে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেয়; বৃষ্টির পানিতে ময়লা গড়িয়ে মূল সড়কে চলে আসে। এতে মহাসড়কের বাসযাত্রী থেকে শুরু করে পাশ দিয়ে যাওয়া ট্রেনের যাত্রীরাও চরম ভোগান্তির শিকার হন। আবার খোলা জায়গায় এই আবর্জনা পোড়ানো হলে বিষাক্ত ধোঁয়ার কুণ্ডলী জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি করছে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. ওমর কাইয়ুম জানান, খোলা জায়গায় জৈব বর্জ্য পচনের ফলে যে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়, তা থেকে চোখ ও শ্বাসনালিতে জ্বালাপোড়া হতে পারে। এর ফলে শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতা, হাঁপানি, ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া এমনকি ফুসফুসের ক্যানসারের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পরিদর্শক অরজিত কুমার দাশ জানান, ১৪ জন নারী ও ৩২ জন পুরুষ শ্রমিক নিয়মিত পরিষ্কারের কাজ করলেও আধুনিক ব্যবস্থাপনা না থাকায় সমস্যা কাটছে না।

এ বিষয়ে পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) নেজামুল হক বলেন, ‘ডাম্পিং স্টেশন স্থাপনের জন্য পটিয়া সদরের ইন্দ্রপুল এলাকায় একটি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে মামলাসংক্রান্ত জটিলতার কারণে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।’

পটিয়া পৌর প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানুর রহমান বলেন, ‘একটি আধুনিক ডাম্পিং স্টেশন পটিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি। পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে আমরা দ্রুত এর কাজ শুরু করতে পারব বলে আশা করছি।’

এমআর/বিআরইউ