দুপুরেও কুয়াশার অন্ধকারে ঢাকা রাজধানী
সকাল পেরিয়ে দুপুর গড়িয়ে গেলেও রাজধানী ঢাকার আকাশে সূর্যের দেখা নেই। চারপাশ কুয়াশার চাদরে মোড়া, যেন এখন দুপুর নয়, নেমে এসেছে এক ঝাপসা আলোর ভোর। ঠান্ডা বাতাসের কারণে শহরের ব্যস্ততা আজ অনেকটাই ধীর, রাস্তাঘাটে মানুষের আনাগোনা কম। খুব প্রয়োজন আর জীবিকার তাগিদেই কেবল মানুষ বাইরে বেরিয়েছেন গরম কাপড় জড়িয়ে। কুয়াশার সঙ্গে বাতাস মিলিয়ে এমন শীতের দুর্ভোগে অনেকদিন পড়েননি রাজধানীবাসী।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ঢাকার চিত্র এমনটাই দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
যারা জীবিকার তাগিদে বের হতে বাধ্য হয়েছেন, তাদের প্রতিটি পদক্ষেপেই ধরা পড়ছে কষ্টের ছাপ। রিকশাচালক, দিনমজুর, ভ্যানচালকসহ খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য এই শীত যেন আরও নির্মম। কনকনে বাতাস আর ঘন কুয়াশার ভেতর দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে ঠান্ডায় কাঁপছে মানুষ, কুয়াশার কারণে ঝাপসা হয়ে আসছে একটু দূরের দৃষ্টিসীমা। সূর্যের উষ্ণতা না পেয়ে কুয়াশায় অন্ধকার হয়ে আছে চারদিক—শীতের এই তীব্রতায় নীরবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজধানীর জীবন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আগেই জানিয়েছে, সারা দেশে কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে অনেক জায়গায় শীতের অনুভূতি অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকলেও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
বিজ্ঞাপন
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানিয়েছেন, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।
রাজধানীর পল্টন মোড়ে কথা হয় রিকশাচালক আব্দুল করিমের সঙ্গে। হঠাৎ এমন তীব্র শীত নিয়ে তিনি বলেন, ভাই, এই ঠান্ডায় রিকশা চালানো খুব কষ্টের। মনে হচ্ছে শরীর জমে যাচ্ছে। বাইরে মানুষ কম থাকায় ভাড়াও কমে গেছে। অনেক বছর ঢাকায় রিকশা চালাই, কিন্তু এত শীত অনেকদিন দেখিনি।
মালিবাগ এলাকার ফুটপাতের দোকানদার জুয়েল রানা বলেন, শীতের কারণে কাস্টমার কমে গেছে। মানুষ বাইরে নেই। শীতের সঙ্গে তীব্র বাতাস, এর মধ্যে দোকান খুলে বসে আছি, বিক্রি নেই। অতিরিক্ত শীতের কারণে দাঁড়িয়েও থাকা যাচ্ছে না।
অফিসের মার্কেটিংয়ের কাজে বাড্ডা এলাকায় এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবি ফয়সাল আহমেদ। তিনি বলেন, এত শীত অনেক বছর ধরে ঢাকায় অনুভূত হয়নি। এত বাতাস বইছে, মনে হচ্ছে বাইরে টিকে থাকাই কঠিন। তবুও অফিসের কাজে আজ ফিল্ডে ঘুরতে হচ্ছে, যা খুবই অসহনীয় মনে হচ্ছে। আরও বেশি কষ্ট হচ্ছে খেটা খাওয়া, ভাসমান মানুষের কথা ভেবে। তারাই সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে এই তীব্র শীতে।
এএসএস/জেডএস