বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) থেকে শুরু হওয়া কঠোর বিধিনিষেধে যেখানে প্রয়োজন সেখানে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সোমবার (২৮ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

‘সেনাবাহিনীর সদস্যরা শুধুমাত্র টহল দেবে নাকি তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হবে’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে প্রয়োজন সেখানে সেনাবাহিনী সদস্যদের... কারণ তারাতো দেশ রক্ষার জন্যই কাজ করে। তারা বিভিন্ন দুর্যোগ-দুর্বিপাকে সবসময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এটিও জাতির জন্য একটি দুর্যোগ। এ দুর্যোগের সময় তাদের সহযোগিতা যেখানে প্রয়োজন হয় সেখানে নেওয়া হবে।’

‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে আইন প্রয়োগ করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তো ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয় না।’ 

সীমিত পরিসরে বিধিনিষেধ সোমবার থেকে শুরু হলেও বৃহস্পতিবার থেকে কঠোর হচ্ছে। এতে মানুষের মনে বিভ্রান্তির তৈরি হয়েছে- একজন সাংবাদিক এ প্রসঙ্গে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট, যেটাকে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট বলা হচ্ছে, সেটি আসার কারণে আমাদের দেশে করোনা দ্রুত ছড়াচ্ছে। মৃত্যুর সংখ্যাও অতীতের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে।’ 

‘সে প্রেক্ষাপটে সরকার বিভিন্ন জায়গায় নানা বিধিনিষেধ, বিশেষকরে প্রাথমিকভাবে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে আরোপ করা হয়েছিল। পরে ঢাকার চারপাশে আরোপ করা হয়েছে। যেহেতু জনগণ যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রয়োজন ছিল, সেটি মানছে না এবং বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর মধ্যে করোনা নিয়ে আগে যে ভীতি ছিল সেটি এখন আর নাই। যে কারণে করোনা দ্রুত ছড়াচ্ছে। সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে সোমবার থেকে আবারও বিধিনিষেধের কথা বলা হয়েছিল।’ 

তিনি বলেন, ‘যেহেতু ৩০ জুন অর্থ বছর শেষ হতে যাচ্ছে সে বিবেচনায় পরিপূর্ণ লকডাউনের পরিবর্তে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, গণপরিবহন বন্ধ করা হয়েছে, স্বল্প সংখ্যক কর্মকর্তা দিয়ে অফিস চালাতে বলা হয়েছে। ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এবার এ লকডাউন কার্যকর করার জন্য সরকার পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি বিজিবি ও সেনাবাহিনীকেও প্রয়োজনীয় জায়গায় মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমি জনগণকে অনুরোধ জানাবো, এই লকডাউন বা শাটডাউন কোনোটিরই প্রয়োজন হতো না যদি না আমরা নিজেরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতাম। সবাই যদি মাস্ক পরতাম এবং লোক সমাগম এড়াতাম তাহলে এটি প্রয়োজন হতো না। যেহেতু এটি জনগণ সেভাবে অনুসরণ করেনি এবার কঠোর লকডাউনে আমাদের যেতে হচ্ছে।’ 

এবার কেউ যদি এটির ব্যত্যয় ঘটায়, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সাফ জানিয়ে দেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

কিন্তু অফিস চালু রেখে গণপরিবহন বন্ধের সিদ্ধান্তে মানুষের অনেক দুর্ভোগ হচ্ছে। এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বলা আছে, কর্মীদের আনা-নেওয়ার ব্যবস্থা অফিসকেই করতে হবে। আর স্বল্প সংখ্যক কর্মী দিয়ে অফিস করার জন্যও বলা আছে। বিভিন্ন অফিসগুলো সে ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে। যখন লকডাউন হবে, তখন মানুষের একদম যে অসুবিধা হবে না, তাতো নয় কিন্তু বৃহত্তর প্রয়োজনে, জীবন রক্ষার প্রয়োজনে সরকারকে অনেক কিছু করতে হয়।’

এসএইচআর/এসএম