রেল কারখানার আধুনিকায়ন না হলে রেলের উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে মত দিয়েছেন আলোচকরা। মঙ্গলবার (২৯ জুন) পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের উদ্যোগে আয়োজিত রেল কারখানার আধুনিকায়ন শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

বক্তারা বলেন, বিগত ১২ বছরে রেলওয়ের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩০.১৫ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ, ১১৭টি নতুন ট্রেন চালু, ১০২টি বন্ধ স্টেশন চালু করা উল্লেখযোগ্য। এই উন্নয়নের সুফল পেতে হলে কারখানাগুলো আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন। বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান তিনটি কারখানা সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা,পার্বতীপুর কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা ও পাহাড়তলী ক্যারেজ-ওয়াগন কারখানায় গড়ে প্রায় ৬০ শতাংশ জনবল ঘাটতি রয়েছে। 

পাশাপাশি বাজেট ঘাটতি, যন্ত্রাংশের স্বল্পতা, আধুনিক মেশিনের অভাব, অনিরাপদ কাজের পরিবেশের কারণে রেল কারখানাগুলোর উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। রেলের দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের জন্য রেলওয়ে মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী কারখানাগুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে। আমদানি করতে হবে আধুনিক মানসম্পন্ন যন্ত্রাংশ ও মেশিন। আর সেই সঙ্গে নিয়োগ দিতে হবে শ্রমিক-কর্মচারীদের।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, কারখানার সাথে যাত্রী সেবা ও পণ্য পরিবহনের সাথে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। বর্তমানে রেল কারখানাগুলোতে জনবল সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। পাশাপাশি ব্যবহৃত অধিকাংশ মেশিনগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ। পাহাড়তলী ক্যারেজ ও ওয়াগন কারখানায় ৪৩১টি মেশিনের মধ্যে ২০০টিরও বেশি মেশিন মেয়াদোত্তীর্ণ ও সৈয়দপুর কারখানায় ৭৮৭টি মেশিন এর মধ্যে ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে ৪৪৮টি মেশিন। 

রেলওয়ের মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী ৩০ বছরে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের জন্য ৪৭৪টি ইঞ্জিন, ৫ হাজার ১৪৩টি কোচ ও ৬ হাজার ৪৩৯টি ওয়াগন কিনতে হবে। এ জন্য নতুন করে ১০টি ওয়ার্কশপ নির্মাণ করতে হবে। পাশাপাশি বিদ্যমান চারটি ওয়ার্কশপের সংস্কার ও আধুনিকায়ন করতে হবে। কাজেই রেল কারখানা আধুনিকায়ন না করে অন্ধকারে রেখে রেলের উন্নয়ন সম্ভব নয়।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান। আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের টিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার বোরহান উদ্দিন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, পার্বতীপুর ডিজেল শপের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি কামাল উদ্দিন খান, সৈয়দপুর রেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।

এএসএস/ওএফ