করোনার অজুহাতে ছাঁটাই করা হোটেল শ্রমিকদের পূর্ণ বকেয়া মজুরি, উৎসব ভাতা, ১০ হাজার টাকা প্রণোদনা প্রদান ও স্বল্প মূল্যে রেশনিং চালুর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশন।

মঙ্গলবার (২৯ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এসব দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির দেওয়া তথ্য মতে, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা। বাংলাদেশে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের মধ্যে বৃহত্তর সেক্টর হচ্ছে হোটেল। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এ খাতে কর্মরত আছেন ২২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৩২ জন। যদিও আমাদের হিসাবে প্রায় ৩০ লাখ। গত বছর করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে চলতি বছর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের আগ পর্যন্ত ৪০-৪৫ শতাংশ শ্রমিক বেকার ছিলেন। গত সাধারণ ছুটির নামে লকডাউন কার্যকর করে টানা ৬৬ দিন সব ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। এরপর সীমিত পরিসরে প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দিলে মালিকরা করোনার অজুহাতকে কাজে লাগিয়ে শ্রমিকদের আগের চেয়ে কম মজুরি ও বেশি শ্রম ঘণ্টায় কাজ করতে বাধ্য করেছেন। করোনাকালে শ্রমিকরা মানবেতর জীবন-যাপন করতে শুধু বাধ্য হচ্ছে না, পারিবারিক জীবনেও আর্থিক সংকটের কারণে বহুমাত্রিক সমস্যার মধ্যে নিপতিত হচ্ছেন। 

তারা আরও বলেন, হোটেল শ্রমিকরা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার সাহায্য সহযোগিতা পাননি, আর মালিকরা এ ব্যাপারে নির্লিপ্ত থেকেছেন। করোনার শুরু থেকেই হোটেল শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর দফতরসহ সরকারি বিভিন্ন দফতরে বারবার চিঠি ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। কিন্তু অদ্যাবধি কোনো দফতর থেকে শ্রমিকদের জন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি জাতীয় ফেডারেশনের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হোটেল শ্রমিকদের একটি ছোট তালিকা দুইবার শ্রম মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও ওই তালিকার একজন শ্রমিকও সরকারি প্রণোদনা পাননি। এ পরিস্থিতিতে সরকার নতুন করে আবার লকডাউন ঘোষণা করলে ও আগামী ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন কার্যকর হবে বলে প্রচার চালালে ইতোমধ্যে বেশির ভাগ হোটেল প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে শ্রমিকরা তাদের বকেয়া মজুরি ও বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী উৎসব বোনাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। 

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশনের সহসভাপতি আক্তারুজ্জামান খান, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, কেন্দ্রীয় সদস্য আতিকুল ইসলাম টিটু, বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট মিষ্টি বেকারি শ্রমিক ইউনিয়ন ঢাকা মহানগর কমিটির সহসভাপতি মো. খোকন, মতিঝিল থানা কমিটির সভাপতি মো. বাবুল হোসেন প্রমুখ।

এমএইচএন/এসকেডি