চেকপোস্ট পার হতে অজুহাতের যেন শেষ নেই
ব্যক্তিগত গাড়ি ভর্তি মানুষ। সামনের আসনে বসা যাত্রীর হাতে ডাক্তার দেখানোর কাগজপত্রের ফাইল। পুলিশ চেকপোস্টে উপস্থিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতের ফাইলটি উঁচু করে ধরে রেখেছেন। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য জিজ্ঞাসা করতেই বলে উঠলেন ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছেন।
আরেকজন মোটরসাইকেলে করে কিছু সবজি নিয়ে যাচ্ছেন। জিজ্ঞাসা করতেই উত্তরে বলছেন, বাজার করতে বের হয়েছিলেন।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (৩ জুলাই) রাজধানীর উত্তরা, বিমানবন্দর সড়কে পুলিশের চেকপোস্টে দেখা গেলো এমন চিত্র। সাত দিনব্যাপী সর্বাত্মক লকডাউনের (বিধিনিষেধ) তৃতীয় দিনে সকালে সড়কে যানবাহন ও মানুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়।
চেকপোস্টে দায়িত্বরত ট্রাফিক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানান, নানা অজুহাতে মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন। এ সড়কে অধিকাংশই গার্মেন্টস অফিসের পরিচয় দিয়ে যেতে চাইছেন। অনেকেই ঠুনকো অজুহাত দাঁড় করিয়ে গাড়ি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
বিজ্ঞাপন
রাজধানীর উত্তরা তিন নম্বর সেক্টর থেকে সাত নম্বর সেক্টরে কাঁচাবাজার করতে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়েছেন একজন। চেকপোস্টে পুলিশ কারণ জিজ্ঞাসা করতে বললেন, একটু বাজার করতে গিয়েছিলাম। উত্তরে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্য বলেন, বাসার আশপাশে তো অনেক বাজার রয়েছে। তাছাড়া ভ্যানগাড়িতেও বাজার করা যায়। অনেকটাই অপ্রস্তুত হয়ে যাওয়া এ মোটরসাইকেল আরোহী বলেন, আছে, ভাবলাম এদিক থেকে বাজার নিয়ে যাই। যাব সামনেই। খুব বেশি দূরে যাব না।
সরেজমিনে দেখা যায়, এ সড়কে এমন বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে পুলিশ চেকপোস্ট পার হতে চাইছে অনেকেই। অনেকেই কার্ড দেখিয়ে টিকা নিতে যাচ্ছেন বলে জানান। কেউবা জরুরি সেবার কথা বলে পার পাওয়ার চেষ্টা করছেন। অবশ্য সবার যুক্তি টিকছেও না।
পুলিশ সদস্যরা অধিকাংশ গাড়িই ঘুরিয়ে দিচ্ছেন। কেবল উপযুক্ত প্রমাণ দেখাতে ও বলতে পারলেই চেকপোস্ট পার হয়ে যাওয়ার সুযোগ মিলছে যাত্রীদের।
উত্তরা পূর্ব জোন ট্রাফিক সার্জেন্ট কাজী মিজান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মানুষের অজুহাতের যেন শেষ নেই। অধিকাংশই ভুয়া অজুহাত দিচ্ছেন আমরা কিন্তু তা বুঝতে পারছি। ফলে তাদের গাড়িও ঘুরিয়ে দিচ্ছি। অফিস-আদালত বন্ধ থাকার ঘোষণা রয়েছে, এরপরও অনেকেই এই অফিসের দোহাই দিচ্ছেন। আসলে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।
গার্মেন্টস অফিসের মেশিন বিকল হয়ে যাওয়ায় এক প্রকৌশলীকে আনতে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়েছেন সোহাগ নামের একজন। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আসলে অফিস থেকে বলা হয়েছে তাই বের হয়েছি। আমরা তো চাকরি করি। অফিসের আদেশ শুনতেই হবে। কিন্তু এখানে তো যেতে দিচ্ছে না।
একে/জেডএস