নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফুডস ফ্যাক্টরির আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। প্রায় ১৮ ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বলছে। ঘটনাস্থলে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ১৭টি ইউনিট।

শুক্রবার (৯ জুলাই) সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাসেল শিকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

রাসেল শিকদার বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে এখন ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট কাজ করছে। আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আমাদের টিম ঘটনাস্থল থেকে জানিয়েছে ভবনটিতে ফাটলও ধরেছে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি আগুন নিয়ন্ত্রণে।

বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে পর্যায়ক্রমে কাজ করেছে ডেমরা, কাঞ্চন, সিদ্ধিরগঞ্জ, আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকাসহ ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট। 

এদিকে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন স্বপ্না রানী (৪৪) ও মিনা আক্তার (৪৩) মোরসালিন (২৪)। এছাড়া প্রায় অর্ধশত শ্রমিক আহত হয়েছেন। যাদের অধিকাংশ চিকিৎসাধীন রয়েছেন রূপগঞ্জের ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বাকিরা চিকিৎসাধীন ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে।

নিহতের সংখ্যা আরও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। ৭০-৮০ জন শ্রমিক ওই ভবনের ভেতরে রয়েছে বলে জানান কারখানার শ্রমিক ও নিখোঁজের স্বজনরা। গতকাল রাত থেকেই নিখোঁজ শ্রমিকদের দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন স্বজন ও উত্তেজিত জনতা। আজ সকাল থেকেও কারখানার প্রধান গেইট সংলগ্ন রাস্তায় নিখোঁজদের স্বজনরা আহাজারি করছেন।

নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অগ্নিকাণ্ডের সময় ছয়তলা ভবনের চারতলার শ্রমিকরা কেউ বের হতে পারেননি। সিকিউরিটি ইনচার্জ চারতলার কেচি গেটটি বন্ধ করে রাখায় কোনো শ্রমিকই বের হতে পারেনি। প্রতিদিন ৪ তলায় ৭০-৮০ জন শ্রমিক কাজ করতেন। চতুর্থ তলার শ্রমিকদের ইনচার্জ মাহবুব, সুফিয়া, তাকিয়া, আমেনা, রহিমা, রিপন, কম্পা রানী, নাজমুল, মাহমুদ, ওমরিতা, তাছলিমাসহ প্রায় ৭০-৮০ জন শ্রমিকের খবর পাওয়া যাচ্ছে না। 

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কারখানার চারতলার ভবনের আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। তাছাড়া ধীরে ধীরে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়েও পড়ছে। কারণ ভবনের পঞ্চমতলায় ছিল কেমিকেলের গোডাউন। 

এ বিষয়ে কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ শাহ আলম বলেন, মধ্যরাতে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও সকাল ৬টার দিকে আবার কারখানার চার তলায় আগুন বাড়তে থাকে। আগুন নিয়ন্ত্রণের আগ পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট। 

স্বজনরা অভিযোগ করে জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষের অবহেলায় কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তাছাড়া কারখানায় আগুন লাগার পরও কারখানা কর্তৃপক্ষ কেচি গেটের তালা না খোলায় শ্রমিকরা বের হতে পারেননি।

এমএসি/এইচকে