ছবি : সুমন শেখ

করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ মধ্যরাত থেকে শিথিল হচ্ছে। ঈদের পর ২৩ জুলাই সকাল ছয়টা থেকে ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত আবারও কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকর করবে সরকার। 

মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) বিধিনিষেধ শিথিলের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে বলা হয়, ঈদ উদযাপন, জনসাধারণের যাতায়াত, ঈদ পূর্ববর্তী ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা, দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে আগামী ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ছয়টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করা হলো। 

প্রজ্ঞাপনে ৩০ জুন এবং ৫ জুলাইয়ের দুটি স্মারকের সূত্র দেওয়া হয়। ১ জুলাই সকাল ছয়টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত মানুষের সার্বিক কার্যাবলী ও চলাচলে ২১টি বিধিনিষেধ আরোপ করে ৩০ জুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। আর ৫ জুলাই এ বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও সাত দিন বাড়িয়ে আবারও প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ৩০ জুলাই জারি হওয়া প্রজ্ঞাপনে থাকা ২১টি বিধিনিষেধ শিথিল করার কথা মঙ্গলবারের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে। 

এদিকে, শিথিল বিধিনিষেধে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনে নতুন করে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বুধবার সরকারি এক তথ্য বিবরণীতে এসব নির্দেশনার কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, আজ (বুধবার) মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ছয়টা পর্যন্ত আগের আরোপিত বিধিনিষেধ শিথিল থাকলেও করোনাভাইরাসজনিত রোগের সংক্রমণ বিস্তার রোধকল্পে এ সময়ে সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করে সব কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

এ সময়ে পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্রে গমন ও জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান যেমন- বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান (ওয়ালিমা), জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি এবং রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পরিহার করতে হবে। 

এছাড়া আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে পশুর হাট ব্যবস্থাপনায় ১২টি নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।

নির্দেশনাগুলো হলো

১. আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে অনলাইনের পাশাপাশি যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি এবং সরকারি অন্যান্য নির্দেশনা মেনে কোরবানির পশুর হাট বসাতে হবে।

২. কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের একমুখী চলাচল থাকতে হবে অর্থাৎ প্রবেশপথ এবং বহির্গমন পথ পৃথক করতে হবে।

৩. হাতে পর্যাপ্ত সময় রেখে পশু ক্রয় নিশ্চিত করতে হবে।

৪. বৃদ্ধ ও শিশুদের পশুর হাটে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

৫. পশুর হাটে জাল টাকা শনাক্তকরণে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

৬. হাটে আসা সবাই যাতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে তা নিশ্চিত করতে হবে।

৭. হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতা প্রত্যেকের তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র, হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত বেসিন, পানি এবং জীবাণুনাশক সাবান রাখতে হবে।

৮. অনলাইনে পশু ক্রয়-বিক্রয়ে মানুষকে উৎসাহিত করতে হবে। অনলাইনের মাধ্যমে পশু কেনা-বেচার জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ও ই-ক্যাবের যৌথ উদ্যোগে এবং এটুআই এর কারিগরি সহায়তায় এ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এর আওতায় সারাদেশের ২৪১টি ডিজিটাল হাট যুক্ত করা হয়েছে।

৯. যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় এমন স্থানে পশুর হাট বসানো যাবে না। এ নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

১০. পশুর হাটে সামাজিক দূরত্ব মেনে লাইনে দাঁড়ানো, প্রবেশ ও বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে হবে।

১১. সরকার নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি দিতে হবে।

১২. পশু কোরবানির পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের বর্জ্য অপসারণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এসএইচআর/আরএইচ