প্লাস্টিক পণ্যসহ কাভার্ডভ্যান চোরচক্রের দুই সদস্য গ্রেফতার
চোরাই কাভার্ডভ্যান ও প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কাঁচামালসহ সংঘবদ্ধ চোরচক্রের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
গ্রেফতাররা হলেন- মো. লিটন ও বেলাল হোসেন শিবলু। একটি মামলার প্রেক্ষিতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় অভিযান করে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের একটি দল টানা ৩৬ ঘণ্টা অভিযান পরিচালনা করে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক পণ্যসহ একটি কাভার্ডভ্যান জব্দ করেছে।
বিজ্ঞাপন
উদ্ধার হওয়া পণ্যের মধ্যে ছিল সৌদিআরব থেকে আমদানিকৃত ৩৩৪ বস্তা প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কাঁচামাল। এসব বস্তায় ২৫ কেজি করে মোট ৮৩৫০ কেজি কাঁচামাল ছিল।
সোমবার (১৯ জুলাই) দুপুরে ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রওয়ানা দেয়া একটি কাভার্ডভ্যান ছিনতাই হয়েছে বলে আমরা তথ্য পাই। ওই তথ্যের ভিত্তিতে যাত্রাবাড়ী ধলপুর থেকে কাভার্ডভ্যানসহ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।’
‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, ছিনতাই করা কাভার্ডভ্যানে ছিল প্লাস্টিকের দানা, যা সৌদি আরব থেকে আমদানিকৃত। গুড লাক ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি কাভার্ডভ্যানে করে এসব ঢাকা ও গাজীপুরে পাঠিয়ে থাকে।’
‘গ্রেফতারদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের সেনবাগ থেকে ৩৩৪ বস্তা প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কাঁচামাল জব্দ করা হয়েছে। যার মূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা।’
‘জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার দুজন জানান, অনেক দিন ধরেই তারা কারখানায় ব্যবহৃত কাঁচামাল ও উৎপাদিত মালমালসহ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানসহ চুরি করতেন। তারা এই কাভার্ডভ্যানটি চুরির জন্য দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা করেছিলেন।’
গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম আরও বলেন, ‘চক্রের একজন দক্ষ ড্রাইভার রয়েছে। তিনি নিজের আসল পরিচয় গোপন করে ট্রাক বা কাভার্ডভ্যানের হেলপার হিসেবে কাজ নেন। পরবর্তী সময়ে সুযোগ বুঝে মালামালসহ গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান। চুরির কাজের সময় তিনি ১টি নতুন মোবাইল ও সিম ব্যবহার করতেন, যাতে চুরি সম্পন্ন করার পরে কেউ তাকে শনাক্ত করতে না পারেন। মোবাইলটি তিনি শুধুমাত্র চোরচক্রের সদস্যদের সাথে যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করতেন। তারা চুরি করা মালামাল গোপন জায়গায় লুকিয়ে রেখে বিক্রি করতেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।’
কাভার্ডভ্যান মালিক বা কাঁচামাল সরবরাহকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি কিংবা কাভার্ডভ্যান মালিকদের উচিত চালক ও হেলপারদের পরিচয়, জাতীয় পরিচয়পত্র সংরক্ষণ করা। যাতে পরবর্তীতে কোনো অপরাধ সংঘঠিত হলে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়।’
কাভার্ডভ্যানে জিপিএস ট্রাকিং ডিভাইস ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জিপিএস ট্রাকিং ডিভাইস ব্যবহার করলে সহজে গাড়ীর অবস্থান সনাক্ত করা সম্ভব। আর এধরণের চুরি বা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলে কেউ লুকাবেন না বা গোপনে নেগোসিয়েশন করবেন না।’
অপর একটি অভিযানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে দুই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা রমনা বিভাগের একটি টিম। রোববার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানী থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- আলমগীর হোসেন আলম (৩২) ও শফিকুল ইসলাম শফিক। তাদের হেফাজত হতে ১৩৬ বোতল বিদেশি ও ভেজাল মদ এবং মদ তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে বনানী থানায় একটি মামলা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত পৃথক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি’র যুগ্ম কমিশনার (ডিবি দক্ষিণ) মাহবুব আলম বলেন, বনানী থানার মহাখালী ওয়ারলেস ২০ নম্বর ওয়ার্ডের জিপি-চ৭৯/১ নম্বর বাসার একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় রমনা গোয়েন্দা পুলিশের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিমের একটি দল। সেখানে বিভিন্ন ব্রান্ডের ১৩৬ বোতল বিদেশি ভেজাল মদ ও মদ তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা মদের ওজন ১০১ দশমিক ৮৭৫ লিটার, দাম দুই লাখ ১৭ হাজার ৮৭৫ টাকা।
জেইউ/এইচকে