‘আমরা কয়েকজন মিলে কোরবানি দিয়েছি। গরুর দাম প্রায় দেড় লাখ টাকা। কোরবানি শেষে চামড়া কিনতে তেমন কেউ আসেননি। মাত্র একজন এসেছিলেন। তিনি মাত্র ১০০ টাকা দাম বলেছেন! সরকার নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী যা অনেক কম’
 
কথাগুলো বলছিলেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের চাঁপাচৌ গ্রামের বাসিন্দা সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘কোরবানির পশুর চামড়া গরিবের হক। চামড়া বেশি দামে বিক্রি করতে পারলে তা গরিব মানুষই পাবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘চামড়া বিক্রি করতে না পারলে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। এ ঝামেলায় যেতে চাই না। সেজন্য ১০০ টাকাতেই চামড়া বিক্রি করে দিয়েছি। গরিবের হক নিয়ে এ কেমন পরিহাস?’

একই গ্রামের শাওন নামে আরেক বাসিন্দা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমরা এবার ছাগল কোরবানি দিয়েছি। ছাগলের চামড়া কেউ দামাদামি করতেই আসেনি! এজন্য এখন মাটিতে পুঁতে ফেলব।’

ঈদের দিন অর্থাৎ বুধবার (২১ জুলাই) বিকেলে গুণবতী বাজারে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকজন মৌসুমি ব্যবসায়ী গ্রাম থেকে চামড়া কিনে আনলেও বিক্রেতা খুঁজে পাচ্ছেন না। তাদের চোখে-মুখে হতাশা। 

চামড়ার মৌসুমি ব্যবসায়ী অলি আহম্মদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘গ্রাম ঘুরে কয়েকটি চামড়া কিনে বিক্রি করতে এনেছি। এখন পর্যন্ত একজন ক্রেতাও পাইনি।’ 

একই বাজারের নিত্যপণ্যের ব্যবসায়ী আবু ছায়েদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘গতবছর অনেকেই চামড়া বিক্রি করতে না পেরে মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন৷ এবারও সেরকম অবস্থা তৈরি হয়েছে। তেমন কেউই চামড়া কিনছেন না।’

সরকার এ বছর রাজধানীর জন্য গরুর চামড়ার (লবণযুক্ত) দাম প্রতি বর্গফুট ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। এছাড়া প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়া ১৫ থেকে ১৭ টাকা, বকরির চামড়া ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।  

এসএইচআর/আরএইচ