বিএসএমএমইউ আঙিনার ছবি

সোমবার (২৬ জুলাই) দুপুর ১২টা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) আঙিনায় ভ্যানে শুয়ে কাতরাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকার বাসিন্দা মোতালেব হোসেন। চিকিৎসা নেওয়ার পর বাসায় রওনা হতে হবে ভ্যানে করেই। কিন্তু অসহ্য গরম আর শারীরিক দুর্বলতার কারণে এত দূরের পথ ভ্যানে যেতে ইচ্ছে করছে না মোতালেবের। 

মোতালেবের ভাগ্নে শরিফুল বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদী বাতব্যথাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন তিনি। কোনো উপায় না পেয়ে সকালে ডাক্তার দেখাতে ভ্যানে করেই নিয়ে আসছি। এখন আবার ভ্যানে করেই ফেরত নিতে হবে। কিন্তু ওনার ভ্যানে যেতে কষ্ট হচ্ছে, উনি রাজি না। অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়াতো অনেক। লকডাউনের কারণে  সিনজি বন্ধ।’

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল টিকা কেন্দ্রে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা হয় মো. রাজিবের সঙ্গে। তিনি জানান, মাসদুয়েক পর সৌদি আরব যাবেন। টিকা নিতে ফরিদপুর থেকে ঢাকায় এসেছেন। ঢাকায় পৌঁছাতে তাকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। এখন আবার বাড়ি ফেরা নিয়েও চিন্তিত তিনি। 

বিএসএমএমইউ আঙিনার ছবি

করোনা সংক্রমণ রোধে ঈদুল আজহার পর শুরু হওয়া কঠোরতম বিধিনিষেধের চতুর্থ দিন চলছে। আজ সোমবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কঠোর বিধিনিষেধে সড়কে যানবাহন না থাকায় হাসপাতালে পৌঁছাতে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। ঢাকায় বসবাসকারীদের অতিরিক্ত রিকশা ভাড়া গুনতে হয়েছে। 

অন্যদিকে, দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে আসা রোগীদের কখনও হেঁটে, আবার কখনও মোটরসাইকেলে বা কয়েক দফায় রিকশায়  হাসপাতালে পৌঁছাতে হয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন সৌদি আরব ও কুয়েতপ্রবাসী কর্মীরা। ঢাকায় টিকা নিতে আসা প্রবাসীদের বেশিরভাগই দূরদূরান্ত থেকে এসেছেন।

টাঙ্গাইল থেকে বারডেম জেনারেল হাসপাতালে ডায়বেটিসের চিকিৎসা নিতে আসা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, এই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন মাসদুয়েক আগে। ডাক্তারের বেঁধে দেওয়া সময়ে ফলোআপের জন্য এই কঠোর বিধিনিষেধে তাকে খুব কষ্ট করে ঢাকায় আসতে হয়েছে।

এই হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে কথা হয় সুমাইয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাবা ভর্তি আছে হাসপাতালে। দু-একদিন পরপর বাসায় যেতে হয়। আসা-যাওয়ায় কী যে অশান্তি।’

করোনা সংক্রমণ কমাতে ১ থেকে ৭ জুলাই কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। পরে তা ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ঈদুল আজহার কারণে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল হয়। ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোরতম বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার।

এনআই/এইচকে