করোনা সংক্রমণ রোধে ঈদুল আজহার পর শুরু হওয়া কঠোর বিধিনিষেধের পঞ্চম দিন চলছে। চলমান বিধিনিষেধের মধ্যে প্রতিদিনই সড়কে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। এদের মধ্যে জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া ছাড়াও অপ্রয়োজনেও বের হচ্ছেন মানুষ। সড়কে বের হওয়া বিভিন্ন চেকপোস্টে তল্লাশিতে পড়লেই ব্যাংকার আর জরুরি মেডিকেলের দোহাই দেওয়া মানুষের সংখ্যাই বেশি মিলছে।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন চেকপোস্টে থাকা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত সড়কে বের হওয়াদের বেশিরভাগই ব্যাংক কর্মকর্তা পরিচয় দিচ্ছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জরুরি মেডিকেল সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে পরিচয় দিচ্ছেন অনেকে। আবার অনেককে অনলাইন জরুরি ব্যবসার দোহাই দিতে দেখা যায়। তবে বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই সঠিক পরিচয় মেলাতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশের।

রাজধানীর পান্থপথ চেকপোস্টে ইকরাম হোসেন নামে একজনকে গাড়িসহ থামায় পুলিশ। ইকরাম পুলিশকে জানান, হাসপাতালে যাচ্ছেন। তার পরিবারের এক সদস্য হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। 

সেখানে ট্রাফিক পুলিশ মো. আলমগীর হোসেনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, বের হওয়া মানুষদের অজুহাতের শেষ নেই। ধরলেই ব্যাংক কর্মকর্তা, ডাক্তার বা নার্স এসব পরিচয় বেশি দিচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে তারা সঠিক কি-না তা নিশ্চিত না হয়েও ছেড়ে দিতে হচ্ছে।  

চেকপোস্টে আটক সিয়াম নামের এক শিক্ষার্থী জানান, তার এক বন্ধু অসুস্থ, তাকে দেখতে তার বাসায় যাচ্ছেন।

ধানমন্ডির রাসেল স্কয়ারের চেকপোস্টে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেল থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ইব্রাহিম নামের এক মোটরসাইকেল চালক জানান, মোটরসাইকেলে দুজন বহন করায় তাকে থামিয়েছে পুলিশ। তিনি তার ডাক্তার ভাইকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নামিয়ে দিতে যাচ্ছেন।

অপ্রয়োজনে বাসা থেকে বের হওয়ায় এক প্রাইভেটকার চালককে জরিমানা করা হয়। এ নিয়ে তিনি পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। তার ভাষ্য, জরুরি প্রয়োজন না হলে তিনি বাসা থেকে বের হতেন না। কিন্তু পুলিশ সদস্যরা জানান, প্রথমে একটি বেসরকারি মেডিকেলের বড় পদের কথা জানান। পরিচয়পত্র চাইলে দেখাতে না পারায় জরিমানা করা হয়েছে।

রাসেল স্কয়ারে দায়িত্বরত সার্জেন্ট মো. নাজমুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, লোকজনের বের হওয়ার পরিমাণ প্রতিদিনই বাড়ছে। যৌক্তিক কারণ ছাড়াও অনেক বের হচ্ছেন। গাড়ি আটকালেই বলেন ব্যাংকার। এটা সকালে অফিসের সময়ে বেশি হয়। এরপর কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে জরুরি মেডিকেল, কিছু অনলাইন ভিত্তিক সেবার কথাও বলেন। সন্দেহ হলে গাড়ি থামানো হয়। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে থেকে আসা গাড়িগুলো থামানো হয়।

করোনা সংক্রমণ কমাতে ১ থেকে ৭ জুলাই কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। পরে তা ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ঈদুল আজহার কারণে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল হয়। ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার।

এনআই/ওএফ