রাজধানীর রাস্তায় বের হলেই চোখে পড়ছে ব্যক্তিগত গাড়ির সারি। গাড়িগুলোতে থাকা ব্যক্তিদের কেউ ডাক্তার, কেউ ব্যাংকের বড় কর্মকর্তা বা কোনো প্রতিষ্ঠানের জরুরি বিভাগের কর্মকর্তা। কেউবা যাচ্ছেন হাসপাতালে টিকা নিতে। চেকপোস্টে এসব জানাচ্ছেন তারা। 

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সারাদেশে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। যা আগামী ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে। এই সময় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হবে না এবং গণপরিবহন চলবে না জানিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওই প্রজ্ঞাপনে মোট ২৩টি নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু বিধিনিষেধের দিন যত যাচ্ছে, রাস্তায় গাড়ির সংখ্যাও ততই বাড়তে শুরু করেছে।

বুধবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর মিরপুর সড়ক এবং আমিনবাজার সেতু ঘুরে দেখা যায়, অনেক গাড়ি রাজধানীতে প্রবেশ করছে। বেশিরভাগই প্রাইভেটকার। এর বাইরে মোটরসাইকেল, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গাড়ি, পণ্যবাহী ট্রাকও প্রবেশ করছে। 

সরেজমিনে মিরপুর রোডের প্রত্যেকটি পুলিশ চেকপোস্টে কঠোর তল্লাশি করতে দেখা গেছে। এছাড়া রাজধানীর আমিনবাজার সেতুতে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালকদের উপস্থিতি ব্যাপকহারে লক্ষ্য করা গেছে। একই সঙ্গে সেতু দিয়ে রাজধানীতে শত শত মানুষ হেঁটে প্রবেশ করছে। রাস্তায় দায়িত্বপালনকারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন, যেসব গাড়ি বের হচ্ছে তারা সবাই নানা ধরনের জরুরি প্রয়োজনের কথা জানাচ্ছেন। আর এই জরুরি প্রয়োজন জানান দিতে কেউ ব্যবহার করছেন প্রতিষ্ঠান লোগো, লিফলেট অথবা সাদা কাগজে প্রিন্ট করে গাড়িতে লাগাচ্ছেন। তবে যারা উপযুক্ত প্রমাণ দিতে পারছেন না, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

আমিনবাজার সেতু রাজধানীতে প্রবেশের অন্যতম একটি দ্বার। এই পথ দিয়ে কারা রাজধানীতে প্রবেশ করছেন জানতে চাইলে সেখানে কর্তব্যরত দারুসসালাম থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. হারুন-উর-রশিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা যতক্ষণ এখানে দাঁড়িয়ে ডিউটি করছি ততক্ষণ যেটি দেখলাম— টিকা নেওয়া ও হাসপাতালের রোগীরাই এই পথে বেশি প্রবেশ করছেন। এর বাইরে যাদের ঢাকায় বাসা নিয়ে থাকা সম্ভব না, একটু আশেপাশে হেমায়েতপুর বা আমিনবাজার থাকেন তারা অফিসে যাচ্ছেন। সরকার আমাদের যে নীতিমালাটা দিয়েছে, তার বাইরে আমরা কাউকে পেলে প্রসিকিউশনের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করছি।

এদিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থাকা শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ চেকপোস্টে প্রত্যেকটি গাড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় এনে তারপর ছাড়া হচ্ছে। সেখানে শতাধিক ব্যক্তিগত গাড়ির জটলাও চোখে পড়েছে। 

সেখানে দায়িত্বরত শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক জামিল হোসাইন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখানে প্রত্যেকটি ব্যক্তিগত গাড়িতে থাকা মানুষ বিভিন্ন ধরনের কারণ দেখাচ্ছেন। কেউ টিকা নিতে যাচ্ছেন, কেউ হাসপাতালে যাচ্ছেন, কেউ ডাক্তার, কেউ ব্যাংকার বলে জানাচ্ছেন। অনেকে গাড়িতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লোগো লাগিয়েছেন। কেউ কেউ সাদা কাগজে প্রিন্ট করেও জরুরি বুঝানোর চেষ্টা করছে। 

অপ্রয়োজনে বের হওয়া যাদের শনাক্ত করতে পারছি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। আমাদের লোকজন সীমিত। তারপরও যতটা সম্ভব চেষ্টা করছি।

এমএইচএন/এইচকে