টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে আবারও তলিয়ে গেছে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ, সিডিএ, হালিশহরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। টানা দুদিন ধরে জলমগ্ন নগরীতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। 

বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) চট্টগ্রাম পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিকেল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১৪০ দশমিক ২ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।  আজকে সারাদিন ও আগামীকাল চট্টগ্রামে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।

এদিকে জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ, সিডিএ, হালিশহর, নয়াবাজারসহ বেশ কিছু এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। এতে জরুরি প্রয়োজনে যারা ঘরে থেকে বের হয়েছিলেন তাদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। রিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অথবা কোমর সমান পানি ভেঙে ফিরতে হয়েছে বাড়িতে।

সিডিএর ৫ নম্বর সড়ক এলাকার বাসিন্দা আজিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃষ্টি আর জোয়ারের পরিমাণ বাড়লে এই সড়কে পানি উঠবে এটাই নিয়ম হয়ে গেছে। মা অসুস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাব। কিন্তু রিকশা পাচ্ছি না। যাও দুই একটা পাচ্ছি ভাড়া চাচ্ছে কয়েকগুণ বেশি। জলাবদ্ধতা নিরসনে কর্তৃপক্ষ যে প্রকল্প নিয়েছে তা দ্রুত শেষ হলে এ ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলবে।

নয়াবাজার এলাকার বাসিন্দা এমরাউল কায়েস বলেন, জরুরি কাজে বাইরে বের হয়েছিলাম। কাজ শেষে এসে দেখি হাঁটু সমান পানি। ২০ টাকার রিকশা ভাড়া ৪০ টাকা চাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে পানি মাড়িয়ে বাসায় আসি।

অন্যদিকে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রামের মা ও শিশু হাসপাতাল এলাকা। বুধবার বিকেলে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত হাঁটু সমান পানি ছিল হাসপাতালটির নিচতলায়। ফলে হাসপাতালে আসা রোগীরা পড়েন চরম দুর্ভোগে। আজকেও বিকেল থেকে জোয়ার ও বৃষ্টির পানি ঢুকছে মা ও শিশু হাসপাতালে।

 

মা ও শিশু হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ মো. মোরশেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃষ্টি  ও জোয়ার হলে হাসপাতালের নিচতলায় পানি উঠবে, এটি আমাদের নিয়তি। তবে আমরা বৃষ্টির শুরুর পর পানি আসার আগেই নিচতলায় জরুরি বিভাগ, শিশু বিভাগসহ যেসব সেবা ছিল সেগুলো উপরে সরিয়ে নিয়েছি। বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে হাসপাতালের চিকিৎসক, রোগীসহ সবাইকে দুর্ভোগে পড়তে হয়।

তিনি আরও বলেন, সরকার একটি প্রকল্প নিয়েছে জলাবদ্ধতা নিরসনে। আশা করছি, এটি বাস্তবায়ন হলে আমাদের দুর্ভোগ শেষ হবে। চিকিৎসা সেবা যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি আমরা।

হাসপাতালে মেয়েকে নিয়ে এসেছিলেন সানজিদা সুলতানা নামে এক গৃহবধূ। তিনি বলেন, মেয়ে অসুস্থ থাকায় মা ও শিশু হাসপাতালে গিয়েছিলাম, আসার পথে হাঁটু সমান পানি মাড়িয়ে রিকশায় উঠতে হয়েছে।

কেএম/এসকেডি