অপরিকল্পিত লকডাউনের নামে শ্রমিকদের প্রতি যে উদাসীনতা দেখানো হয়েছে তা সভ্য সমাজে মেনে নেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেন, মনে হচ্ছে সরকার শ্রমিকদের মানুষই ভাবে না।

সোমবার (২ আগস্ট) দুপুরে এক ভিডিও বার্তায় জিএম কাদের এ মন্তব্য করেন।    

তিনি আরও বলেন, অদূরদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে এক বছরের মাথায় আবারও শ্রমিকদের হেঁটে, কয়েকগুণ বেশি খরচ করে রাজধানীতে ফিরতে হয়েছে। যেসব শ্রমিক দেশের সমৃদ্ধির জন্য অর্থনীতির চাকা সচল রাখে তাদের সঙ্গে অশোভন ও নির্মম আচরণ করা হয়েছে।

কোরবানির ঈদের আগে যাত্রী পরিবহনে গণপরিবহন চলেছে মাত্র ২ দিন উল্লেখ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আবার ঈদের একদিন পরেই কঠোর বিধিনিষেধের কারণে বন্ধ হয়ে যায় গণপরিবহন। স্বলসময়ে গণপরিবহনে গাদাগাদি করে ঈদযাত্রায় চলাচল করেছে লাখো মানুষ। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে ভিড়ে আটকে পড়ে আরও কয়েক লাখ মানুষ। আবার কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে গত ৩০ জুলাই হঠাৎ ঘোষণা ১ অক্টোবর থেকে তৈরি পোশাক শিল্পপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। এমন ঘোষণায় স্বল্প আয়ের শ্রমিকদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

জিএম কাদের বলেন, শ্রমিকরা হেঁটে, রিকশা বা ভ্যানে অথবা ট্রাকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজধানীর পথে ছোটেন। শুধু কষ্ট নয়, কয়েকগুণ বেশি খরচ করতে হয়েছে চাকরি রক্ষার্থে। প্রতিটি ফেরিতে কয়েক হাজার মানুষ গাদাগাদি করে নদী পার হয়েছেন। এসব কারণে মারাত্মকভাবে উপেক্ষিত হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি। বিপর্যয় এড়াতে সরকারিভাবে ৩১ জুলাই ও ১ আগস্ট সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালু করে সরকার।

তিনি আরও বলেন, গত বছরের এপ্রিল মাসেও লকডাউনের মধ্যে তৈরি পোশাক কারখানা খুলে এমন নির্মম পরিহাস করা হয়েছিল শ্রমিকদের সঙ্গে। তখনও শ্রমিকরা হেঁটে, অসহনীয় দুর্ভোগ নিয়ে রাজধানীতে এসেছিল। গত বছরের লকডাউন থেকে শিক্ষা নেয়নি সংশ্লিষ্টরা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খেটে খাওয়া ও নিন্ম আয়ের শ্রমিক শ্রেণির মানুষ। মনে হচ্ছে সরকার শ্রমিকদের মানুষই ভাবে না।

জিএম কাদের বলেন, শুধু কথার লকডাউন নয়, ব্যাপকহারে গণটিকা কর্মসূচি দিতে হবে। সেখানে দেখা যাচ্ছে সবক্ষেত্রে চরম সমন্বয়হীনতা। সে কারণে কমছে না করোনার ভয়াবহ সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা।
 
এএইচআর/জেডএস