সংগৃহীত ছবি

বার্ড ফ্লু রোগের সংক্রমণ রোধে সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে হাঁস-মুরগী আনা-নেওয়া বন্ধে তিন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বার্ড ফ্লু রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় স্বরাষ্ট্র, বাণিজ্য এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে এ চিঠি দেওয়া হয়েছে।

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য নজর রাখতে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) বার্ড ফ্লু রোগের সংক্রমণ ও বিস্তার রোধে আগাম প্রস্তুতি গ্রহণে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। চিঠির মাধ্যমে অধিদপ্তরকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়।

চিঠিতে দেশের সীমান্তবর্তী জেলাসহ অন্যান্য জেলায় প্রতিদিন বার্ড ফ্লু রোগের অনুসন্ধান, সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক নজরদারির ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সরকারি-বেসরকারি খামারে নিবিড় তত্ত্বাবধানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে কোনো মৃত বা সন্দেহজনক হাঁস-মুরগী বা পাখি পাওয়া গেলে নমুনা সংগ্রহ করে দ্রুত নিকটবর্তী ল্যাব থেকে পরীক্ষা করে ফলাফল অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এছাড়া জেলা ও উপজেলা ভেটেরিনারি হাসপাতাল ও গবেষণাগারে জরুরি ভিত্তিতে পর্যাপ্ত নমুনা পরীক্ষার কিট ও পিপিই সরবরাহ, খামারে জৈব নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

কৃষক ও খামারিদের সতর্ককরণে ব্যাপক প্রচারণা চালানো, দ্রুততার সঙ্গে টিকা সংগ্রহে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেয় মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম চালু এবং এ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত সারাদেশ থেকে সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ তা তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করতে বলেছে।

সম্প্রতি ভারতের নয়টি রাজ্যে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বশেষ দিল্লি ও মহারাষ্ট্র দেশটিতে সংক্রমণের খবর জানিয়েছে। এর আগে উত্তর প্রদেশ, কেরালা, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা এবং গুজরাটে বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়।

মহারাষ্ট্রে গত দুই দিনে ৮০০ মুরগীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে সর্বোচ্চ পাখি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে হরিয়ানায়। গত কয়েক সপ্তাহে রাজ্যটিতে চার লাখেরও বেশি পাখি মারা গেছে। সতর্কে আছে জম্মু ও কাশ্মীর এবং ছত্তিশগড়।

হাঁস-মুরগি ও এ জাতীয় পাখি আমদানি নিষিদ্ধ এবং গাজীপুরে রাজ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি পোল্ট্রি বাজার বন্ধ করে দিয়েছে দিল্লি। সংক্রমণ ঠেকাতে প্রতিটি জেলায় বিশেষজ্ঞদের নিয়ে জরুরি টিম গঠন করা হয়েছে।

কেরালার আলাপ্পুঝা ও কোত্তায়াম জেলায় ১২ হাজার হাঁস মারা যাওয়ার পর সেখানে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার এইচফাইভএনএইট স্ট্রেইন নিশ্চিত হলে গত সপ্তাহে ১০ হাজারের মতো পাখি হত্যা করা হয়। আক্রান্ত এলাকায় মুরগি বিক্রির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে।

এসএইচআর/এমএইচএস