বঙ্গবন্ধু পরিবারের মতো কেউ দেশ গঠনে এত ত্যাগ করেনি
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের মতো পৃথিবীর দ্বিতীয় কোনো পরিবার দেশ গঠনে এত ত্যাগ করেনি বলে মন্তব্য করেছেন নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) কার্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ উদ্বোধন ও বৃক্ষরোপণ শেষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিজ্ঞাপন
নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর দ্বিতীয় কোনো রাজনৈতিক পরিবার নেই, যারা দেশ গঠনে এত বড় ত্যাগ করেছে। অথচ জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া পরিবারটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন গুজব রটিয়েছে। জিয়ার প্রথম কাজই ছিল চরিত্র হনন করা। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় যেন প্রতিষ্ঠিত না হয়, তার জন্য কত ষড়যন্ত্র, প্রতিবিপ্লবের চেষ্টা করা হয়েছে। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে গুজব ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে তারা ব্যাপক পারদর্শিতা দেখিয়েছে। যার খেসারত দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এ কারণে বাংলাদেশ অন্ধকার থেকে অন্ধকারতম হয়েছিল। দারিদ্র্যে জর্জরিত হয়েছিল। এ দারিদ্র্য বিক্রি করে অনেকে পদক পেয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। গুটিকয়েক মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ৩৫ বছর আগেই বাংলাদেশ স্বপ্নের জায়গায় পৌঁছে যেত মন্তব্য করে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশকে সে জায়গায় নিয়ে যাওয়ার সংগ্রামে এখনও লিপ্ত, ১৫ আগস্টের ঘটনা না হলে এ সংগ্রাম করতে হতো না। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের ঘটনার মাধ্যমে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। সম্ভাবনার দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। দারিদ্র্য ও বৈষম্যের কোলে ঠেলে দিয়ে, ইতিহাসকে বিকৃত করে বাংলাদেশকে লণ্ডভণ্ড করে দেওয়া হয়। মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ৩০-৩৫ বছর আগেই আমরা স্বপ্নের জায়গায় পৌঁছে যেতাম। বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয়, বাংলাদেশ তখন স্বল্পোন্নত দেশ ছিল। জিডিপি এখনকার চেয়ে বেশি ছিল।
বিজ্ঞাপন
বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছর শাসনামলকে উন্নয়নের বিস্ময় আখ্যা দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেই সাড়ে তিন বছর সময়কালকে স্বাধীনতাবিরোধীরা সবসময় কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছে। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলের সেই সাড়ে তিন বছর সময়ের গবেষণায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। কোনো শাসনতন্ত্র ছিল না। রক্তাক্ত বাংলাদেশ। রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট নেই। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে শাসনতন্ত্র দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালেই সমুদ্র আইন ও স্থল সীমান্ত আইন করে দিয়ে গেছেন। সীমানা নির্ধারণে পৃথিবীর দেশে দেশে কত রক্তপাত হচ্ছে। একটি বুলেট খরচ করা ছাড়া বঙ্গবন্ধুর আইনে দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সীমান্ত নির্ধারণ করেছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৭ সাল থেকে বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্তের কোনো ভুল নেই। সাম্প্রতিক সময়ে স্পেনের কাতালিয়ানরা স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দিয়েছিল। কিন্তু তাদের নেতা পালিয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু পালিয়ে যাননি। পালিয়ে গেলে দেশ স্বাধীন হতো না।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়েছিল। দেশের মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা ছিল না। জেলখানায় নিরাপত্তা ছিল না। প্রকাশ্য জনসভায় গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। তখন আইনের শাসন ছিল না; বাংলা ভাই, শায়খ আব্দুর রহমানরা নিজেদের শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছিল। এরকম একটি জায়গা থেকে গত ১২ বছরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সফলতার চূড়ায় নিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু যে লক্ষ্য নিয়ে দেশ গঠন করেছিলেন, সে সুন্দর জায়গায় আমরা পৌঁছাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী এখন আন্তর্জাতিক নেত্রী- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ আঞ্চলিক নয়, আন্তর্জাতিক নেতায় পরিণত হয়েছেন। কীভাবে ১৮/২০ কোটি মানুষকে এত ছোট জায়গায় আমাদের নিরাপত্তা দিচ্ছেন। অনেক বড় বড় ধনী দেশ, এ করোনার সময়ে যারা তাদের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল, কিন্তু বাংলাদেশের দরজা বন্ধ হয়নি। এ নেতৃত্বই আমাদের স্বপ্নের গন্তব্যে পৌঁছাবে।
বিআইডব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন নৌ পরিবহন সচিব মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী।
এইউএ/এসএসএইচ