পরীমণিকে নিয়ে বাসায় ১৮ ঘণ্টা কাটানোর ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে এডিসি গোলাম সাকলায়েন শিথিলের ভূমিকায় বিব্রত পুলিশ বাহিনী। তাকে গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) থেকে বদলি করা হয়েছে। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা সাকলায়েন পরীমণির কোনো মামলা তদারকির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সঙ্গত কারণে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে বাহিনীর শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা ভঙ্গের কারণে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরীমণির বিষয়ে কোনো ব্যবসায়ীর তালিকা হয়েছে কি না, কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পরীমণির বিষয়ে কোনো ব্যবসায়ীর তালিকা হচ্ছে না বা কাউকে গ্রেফতারের জন্য কাজ করছে না পুলিশ।

তিনি বলেন, পরীমণি গ্রেফতারের পর বিভিন্ন খবরে নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। পরীমণি ইস্যুতে কোনো ব্যবসায়ীর সঙ্গে সম্পর্ক বা প্রতারণা নিয়ে কোনো পক্ষেরই অভিযোগ নেই। তাই কোনো তালিকা করারও সুযোগ নেই। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে সোমবার (৯ আগস্ট) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ডিএমপি কমিশনার বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার হওয়া চিত্রনায়িকা পরীমণি, ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌয়ের বাসায় যাতায়াত ছিল এমন অভিযোগে ও কথিত মডেলদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের নাম জড়িয়ে চাঁদাবাজি করছে একটি চক্র। এ চক্রটি সমাজের বিশিষ্টজনদের কাছে ফোন করে তালিকায় তাদের নাম থাকার কথা বলে চাঁদা দাবি করছে। এ পর্যন্ত তিন জন বিশিষ্ট ব্যক্তি এ ধরনের চাঁদাবাজির শিকার হওয়ার কথা পুলিশকে জানিয়েছেন। তারা ফোন করে আতঙ্কে থাকার কথা জানিয়েছেন। এমনকি একজন ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা চেয়ে চিঠি দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। চাঁদা না দিলে গণমাধ্যমে তার নাম প্রকাশ করার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, চক্রটি কথিত ভিডিওর কথা বলে বিশিষ্টজনদের ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছে। কিন্তু পুলিশ এ ধরনের কোনো তালিকা করেনি। এমন তালিকার কথা বলে যারা বাণিজ্যে নেমেছে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

শফিকুল ইসলাম বলেন, কারও সঙ্গে সম্পর্ক থাকা তো বেআইনি নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত এ বিষয়ে মামলা না হয়। মডেল-অভিনেত্রী গ্রেফতারের পর ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আমরা চাই না করোনাকালে এমন আতঙ্ক ছড়াক, বিনা কারণে কারও সম্মানহানি ঘটুক। কেউ যাতে মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার না হন সেজন্য সবাইকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে।

ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ করেন, যদি ব্যবসায়ী মহলের কারও কাছে বা কোনো নাগরিকের কাছে এমন তালিকার কথা বলে চাঁদা চেয়ে কেউ ফোন করে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে যেন তারা বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানায়। এ বিষয়ে কোনো অডিও বা ভিডিও থাকলে তা তদন্তের স্বার্থে সংরক্ষণ করে রাখারও অনুরোধ করেন তিনি।

জেইউ/জেডএস