ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের তনুগঞ্জ লেনের কুলুটৌলায় হেলে পড়া ৬তলা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ভেঙে ফেলার প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। 

দরজা-জানালা ভাঙার মাধ্যমে ৬তলা ভবনটি ভেঙে ফেলার প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে শুক্রবার। শনিবার (২৮ আগস্ট) ভবনটির মূল অবকাঠামো ভাঙার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের জানিয়েছেন, সূত্রাপুরের কুলুটৌলায় হেলে পড়া, ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষিত ৬তলা ভবনটি ভেঙে ফেলার প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দুপুরে ভবনের মূল অবকাঠামো ভাঙার কার্যক্রম পরিদর্শনে যাবেন দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ ও রাজউক চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

যে কারণে ভাঙা হচ্ছে ভবনটি

চলতি মাসের ১৯ তারিখে সূত্রাপুরের তনুগঞ্জ লেনের কুলুটৌলায় হাজী বাড়ি নামক ছয়তলা ভবনটি হেলে পড়লে সেদিনই রাজউক চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, দক্ষিণ সিটির ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংক্রান্ত কারিগরি কমিটির সভাপতি ও করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউর রহমান ও সদস্য সচিব খায়রুল বাকের, ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম, ডিএসসিসির ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংক্রান্ত আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি ও অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার, সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম জয়, ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজানুর রহমান ইমন এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, তিতাস গ্যাস ও ডিপিডিসির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা ও স্থানীয় থানার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সহায়তায় ভবনের বাসিন্দাদের নিরাপদে বের করে আনা হয়। তিতাস গ্যাস লিমিটেড ভবনটির গ্যাস সংযোগ এবং ডিপিডিসি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে। পরে উপস্থিত বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি, ডিএসসিসির ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংক্রান্ত কারিগরি কমিটি ও আঞ্চলিক কমিটির সদস্যরা ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে একমত পোষণ করেন এবং ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সেখানে স্টিকার সাঁটিয়ে দেয়। পরে জেলা প্রশাসন ভবনটি সিলগালা করে দেয়।

ঘটনার পর রাজউক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ২২ আগস্ট ভবনটি অপসারণে রাজউক থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ বরাবর পত্র দেওয়া হয়। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো অপসারণ বা ঝুঁকিমুক্ত করার বিষয়ে গঠিত ডিএসসিসির কারিগরি কমিটির ২৫ আগস্টের সভার কার্যবিবরণী এবং রাজউকের ২২ আগস্টের পত্রতে অনুরোধের প্রেক্ষিতে দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস গত ২৫ আগস্ট ডিএসসিসির কারিগরি কমিটির কার্যবিবরণীতে স্বাক্ষর করেন।

সেদিনই দক্ষিণ সিটির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরে ভবনটি ‘নিজ উদ্যোগে, নিজ খরচে ও নিজ ব্যবস্থাপনায় জননিরাপত্তা নিশ্চিতপূর্বক ভেঙে ফেলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে’ ভবন মালিককে পত্র দেওয়া হয়।

এ প্রেক্ষিতে গত ২৬ আগস্ট ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভবনটির সিলগালা খুলে দেয় এবং সেখানে রাখা ভবনের বাসিন্দাদের আসবাবপত্র নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। শুক্রবার সকাল থেকে ভবনটি ভেঙে ফেলার প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করা হয়। শনিবার থেকে ভবনের মূল অবকাঠামো ভাঙার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

হেলে পড়া ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ভাঙা প্রসঙ্গে দক্ষিণ সিটির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার বলেন, বাড়ির মালিক নিজ উদ্যোগে ভবনটি ভেঙে ফেলার কার্যক্রম শুরু করেছেন। ভবনের দরজা-জানালা অপসারণসহ প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ ভবনের মূল অবকাঠামো ভাঙা শুরু হবে।

এ প্রসঙ্গে ডিএসসিসির ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজানুর রহমান ইমন বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন অপসারণে বাড়ির মালিক কাজ করছেন। আমরা তার পাশে থাকব এবং সার্বিক সহযোগিতা করব।

এএসএস/এসএসএইচ