বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশকে আরও সক্রিয় ভূমিকায় দেখতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। একইসঙ্গে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশের কৌশলগত অংশগ্রহণ বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ইইউ মধ্যে কার্যক্রম বৃদ্ধির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত রেনসে তিরিঙ্ক।

বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) কসমস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্ক : ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনায় রেনসে তিরিঙ্ক এ কথা বলেন। 

ইইউর রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘একসঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে কাজ করার জন্য ইইউ সকল দেশের জন্য নিজেদের দ্বার উন্মুক্ত রেখেছে। পুরো ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশের কৌশলগত অংশগ্রহণ বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ইইউর কার্যক্রম বৃদ্ধি করা সম্ভব।’

ভার্চুয়াল আলোচনায় উদ্বোধনী বক্তব্য দেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান এবং সভাপতিত্ব করেন প্রখ্যাত কূটনীতিক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী। এছাড়া সভায় আলোচক প্যানেলে ছিলেন সিপিডির বিশিষ্ট ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ড. রুবানা হক, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. জিয়াদি সাত্তার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ এবং কসমস ফাউন্ডেশনের ইমেরিটাস উপদেষ্টা সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম।

রেনসে তিরিঙ্ক বলেন, ‘ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬০ ভাগ মানুষের বসবাস, আর এই অঞ্চল থেকেই বৈশ্বিক জিডিপির প্রায় ৬০ শতাংশ আসে। অর্থাৎ বৈশ্বিক উন্নয়নে এই অঞ্চলের মানুষের অবদান দুই-তৃতীয়াংশ। বাংলাদেশ যেমন ভারত এবং চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রেখে চলছে, ঠিক একইভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে চায় ইইউ।’

এনায়েতুল্লাহ খান বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে ইইউ খুব ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে দারিদ্র্য বিমোচন, সুশাসন, উৎপাদন খাতে বহুমুখী সম্ভাবনা তৈরি করা। ইইউ বেশকিছু মানবিক মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা বর্তমান ইউরোপীয় জীবনধারা অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।’

ড. ইফতেখার আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন স্বাভাবিকভাবেই একই চিন্তা-চেতনা এবং সাদৃশ্যের ওপর নিজেদের সুদৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। ভূরাজনীতির দিকে আলোকপাত করে তিনি বলেন, বিশ্বের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং ইইউ মুখ্য ভূমিকা রাখবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমান বিশ্ব সমঝোতার বদলে সংঘাতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ কোনো দেশের নেতিবাচক উদ্দেশ্য সাধনে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করবে না। বাংলাদেশ সুন্দর ও স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়।’

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বিশ্বের বর্তমান অস্থিতিশীল অবস্থায় বাংলাদেশকে দারুণভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

বিজেএমইএর সাবেক সভাপতি রুবানা হক বলেন, করোনা পরিস্থিতির শুরুর দিকে অল্প কয়েকজন রাষ্ট্রদূতের মধ্যে ইইউ দূত অন্যতম। তিনি নিজ দায়িত্ব না এড়িয়ে বাংলাদেশে পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট মানুষদের কথা শুনেছেন। পাশে ছিলেন।

এনআই/এসকেডি