এমপির চাকরিজীবী নারী-পুরুষের বিয়ে বন্ধের বক্তব্য প্রত্যাহার দাবি
জাতীয় সংসদের বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য রেজাউল করিমের সংবিধানবিরোধী, নারীর মানবাধিকার বিরোধী, অসম্মানজনক, অযৌক্তিক বক্তব্যে গভীর উদ্বেগ, ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। পাশাপাশি জাতীয় সংসদে তার বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।
মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বার্তায় বলা হয়, গত ৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে 'জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমাণা নির্ধারণ বিল- ২০২১’ ওপর আলোচনায় বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বেকার সমস্যার সমাধানে চাকরিজীবী নারী-পুরুষের মধ্যে বিবাহ বন্ধ করে আইন করার সুপারিশ করেন। এছাড়া নারীর চাকরি করার বিপক্ষেও তিনি যুক্তি উপস্থাপন করেন।
একবিংশ শতাব্দীতে এসে বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্যের এমন নারীবিরোধী, নারীর সাংবিধানিক অধিকার বিরোধী, অসম্মানজনক, অযৌক্তিক বক্তব্যে মহিলা পরিষদ তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করছে।
বিজ্ঞাপন
যখন বাংলাদেশের সরকার নারীর ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং এজন্য সরকারি-বেসরকারি বহু কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, যখন বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সিডও সনদে স্বাক্ষর করে নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য বিলোপে আন্তর্জাতিকভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ এবং আন্তর্জাতিকভাবে নারীর ক্ষমতায়নের অনেক সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে এই ধরনের সংবিধানবিরোধী, নারীবিরোধী, নারীর ক্ষমতায়নের পরিপন্থী, নারী উন্নয়ন নীতিমালার পরিপন্থী, পশ্চাৎপদ ধ্যান-ধারণার বক্তব্য একজন সংসদ সদস্য বার বার কীভাবে দিতে পারেন এবং কী উদ্দেশ্যে দিচ্ছেন সে বিষয়ে মহিলা পরিষদ গভীর বিস্ময় প্রকাশ করছে।
কারণ ইতোপূর্বে এই সংসদ সদস্যই নারীর প্রতি সহিংসতার কারণ হিসেবে নারীর পোশাককে দায়ী করে বক্তব্য দিয়েছিলেন।
মহিলা পরিষদ মনে করে, একজন জনপ্রতিনিধির এই বক্তব্য বাংলাদেশের সংবিধান এবং নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার পরিপন্থী। এই বক্তব্য নারীবিরোধী শক্তি এবং ধর্মীয় মৌলবাদীদেরই পক্ষান্তরে উৎসাহিত করবে।
মহিলা পরিষদ সংসদ সদস্যের এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং সংসদে তার এই বক্তব্যকে দ্রুত এক্সপাঞ্জ (প্রত্যাহার) করার দাবি জানাচ্ছে।
একইসঙ্গে মহিলা পরিষদ জনপ্রতিনিধিদের নারীর সাংবিধানিক অধিকার, ব্যক্তি অধিকার ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে দায়িত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদানের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
জেইউ/জেডএস